প্রতীকী ছবি।
তালিকা প্রকাশের দশ মাসেও নিয়োগপত্র পাননি অঙ্গনওয়াড়ির চাকরিপ্রার্থীরা। খড়্গপুর-২ ব্লকে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকা অঙ্গনওয়াড়ির চাকরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে। সরব হয়েছিলেন অঙ্গনওয়াড়ির নিয়োগ কমিটির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির বিরুদ্ধে। ওই বিক্ষোভের তিন দিনের মাথায় নিয়োগপত্র মেলার আশ্বাস পেলেন চাকরিপ্রার্থীরা!
বৃহস্পতিবার খড়্গপুর-২ ব্লকের মাদপুরে নিজের বাড়িতে চাকরিপ্রার্থীদের ডেকেছিলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ কমিটির সভাপতি অজিত মাইতি। গত দু’দিন ধরে নিজের ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগ নিয়ে কলকাতায় সংশ্লিষ্ট দফতরে গিয়েছিলেন তিনি। তার পরে এ দিন বাড়িতে চাকরিপ্রার্থীদের ডেকে ওই বিষয়ে আলোচনায় বসেন। এমনকী আলোচনা চলাকালীন ফোনে দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজাকে ফোন করে চাকরিপ্রার্থীদের ওই কথপোকথন শোনান। এর পরেই আগামী সাতদিনের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে বলে চাকরিপ্রার্থী মহিলাদের জানিয়ে দেন অজিত। এমন ঘটনায় উচ্ছ্বসিত আন্দোলনকারী মহিলারা।
এত দিন খড়্গপুর-২ ব্লক জুড়ে একটিও অঙ্গনওয়াড়ি না থাকায় ২০১৪ সালে ওই ব্লকে ২৭৫টি অঙ্গনওয়াড়ি খুলে ৫৫০ জনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। তবে স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থার দাবি, ২০১৪ সালে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের পরীক্ষার পরে ওই নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। পরে আদালতের রায়ে ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর সফলদের তালিকা প্রকাশ করে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রায় ১০ মাস চুপ করে থাকার পরে ওই সফল চাকরিপ্রার্থীরা সরব হয়েছিলেন। তাঁরা প্রথমে গিয়েছিলেন নিয়োগ কমিটির সহ-সভাপতি অজিত মাইতির বাড়িতে। তার পরে ওই মহিলাদের মহকুমাশাসকের সঙ্গে কথা বলানোর প্রতিশ্রুতি দেন অজিতবাবু।
তবে গত ২৪ জুন নির্ধারিত সময়ের আগেই চাকরিপ্রার্থী ছাড়াই মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে চলে যান অজিত মাইতি। এই নিয়েই অজিতবাবুর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এমন গরিমসি চলছে বলে অভিযোগ তুলেছিল চাকরিপ্রার্থীরা। তার পরেই এ দিনের ঘটনা। অজিত মাইতি বলেন, “আমি মন্ত্রীর কাছে গত দু’দিন গিয়ে ওই তালিকার ফাইল সই করিয়েছি। এর পরে ওই মহিলাদের ডেকে জানিয়ে দিলাম যে আগামী সাতদিনের মধ্যেই তাঁরা নিয়োগপত্র পেয়ে যাবেন। আসলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ওই মহিলাদের উস্কে ওই বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।” এ দিন আশ্বাস মেলার পরে পপরআড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নিশ্চিন্তা গ্রামের বাসিন্দা সঞ্চয়িতা মণ্ডল জানা বলেন, “দশ মাসে যে নিয়োগপত্র পাইনি সেটা সাতদিনের মধ্যে পাওয়ার আশ্বাসে আমরা খুব খুশি। আসলে আন্দোলনের সুফল পেলাম। তবে আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থনে আন্দোলন করিনি।”