দিলীপ ঘোষের খড়গপুরের বাংলোয় পুলিশ আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার খড়্গপুরে পুরভোট। শনিবার রাতে সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। খবর পেয়েই মেদিনীপুরের সাংসদের বাংলোয় ছুটল পুলিশ। গেলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটও। দিলীপ পুর এলাকার ভোটার নন। তাই ভোটের সময় খড়্গপুরে থাকতে পারবেন না বলে জানায় প্রশাসন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকার কপি ধরিয়ে দিয়ে সাংসদকে এলাকা ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের অনুরোধে কর্ণপাত করেননি দিলীপ। নিজের বাংলোয় থাকার কথা জানিয়ে দেন। পরে খড়্গপুর থানার পুলিশ তাঁকে নোটিস দেয় বলে খবর।
দিলীপের যুক্তি, তিনি এলাকার সাংসদ এবং খড়্গপুরের বাসিন্দা। তা ছাড়া, এখানে সাংসদ-বাসভবনও রয়েছে তাঁর। নিজের সাংসদ এলাকায় থাকার উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে না। অন্য দিকে, প্রশাসনের তরফে দিলীপকে বার বার জানানো হয় বাংলাতে না থাকার জন্য। তারা জানায়, ভোটের প্রচার যে নেতারা করেন তাঁদের ভোটের আগের দিন রাতে থাকা যায় না। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের কথায়, ‘‘মাননীয় সাংসদ এখানে আছেন। যাঁরা পলিটিক্যাল ক্যাম্পেনিং করেন, তাঁরা আগের দিন রাতে এখানে থাকতে পারেন না। তাই ওঁকে অনুরোধ করলাম এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য। এখানে থাকা যায় না। উনি বিধি লঙ্ঘন করছেন।’’ পাল্টা দিলীপের মন্তব্য, ‘‘ওঁদের বক্তব্য, কোনও রাজনৈতিক নেতা, যিনি ভোটার নন, ভোটের সময় থাকতে পারেন না। আমি তো নেতা নই, এখানকার সাংসদ। আর এটা (বাংলো) আমার বাসস্থান। তাই আমি এখানে আছি।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘খড়্গপুরে এমন বহু লোক আছেন, যাঁরা ভোটার নন কিন্তু এখানে আছেন। আমি এখানেই থাকব, ওঁদের বলেছি। বাইরের লোক এখানে এসে গুন্ডামি করছে, বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের গায়ে হাত দিচ্ছে না পুলিশ। আর আমি এখানকার সাংসদ। আমাকে বলছে, এখানে থাকতে পারবেন না! আমি আছি, যা করার করুন।’’
মেদিনীপুরের সাংসদ আরও বলেন, ‘‘আগের বারে ভোটের সময় এখানেই ছিলাম। তৃণমূল বোধহয় আর কোনও রকম ভাবে পারছে না। তাই সরকারি লোক দিয়ে এ রকম ভাবে চাপ দিচ্ছে। আমি আগের নির্বাচনেও ছিলাম, এই নির্বাচনেও থাকব। রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে। না হলে আমি এখন এলাম, আর আমার পিছন পিছন ওরা চলে এল কী করে?’’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ না মানলে সেটা প্রশাসন দেখবে। উনি সাংসদ হয়ে সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে শান্ত জায়গাকে অশান্ত করবেন, সেটা তো নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই করতে দেবে না। আর কমিশনের গাইড লাইন মেনে প্রশাসন কাজ করছে।’’ সব মিলিয়ে ভোটের আগের রাতে খড়্গপুরে তীব্র হল রাজনৈতিক চাপানউতর।