রেল শহর জুড়ে অপচয় হচ্ছে জল। এ বার জলের অপচয় রুখতে বাড়ি প্রতি মিটার বসাতে চলেছে খড়্গপুর পুরসভা। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত চলা পুরসভার বোর্ডের বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে রাস্তার কল থেকে জলের অপচয় বন্ধে ট্যাপ লাগানোর কথাও বলা হয়। তবে সেই ওই ট্যাপ রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে স্থানীয় বাসিন্দা ও কাউন্সিলরকে। কোনওভাবে ট্যাপ চুরি গেলে অথবা ভেঙে দেওয়া হলে সেই কল সিল করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রের খবর, এক্ষেত্রে শহরকে ইন্দা, তালবাগিচা, মালঞ্চ, পাঁচবেড়িয়া, দেবলপুর, কৌশল্যা-সহ ১০টি অঞ্চলে ভাগ করে ওই কাজ চালানো হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ইন্দা, তালবাগিচা ও মালঞ্চ অঞ্চলে বাড়ি-বাড়ি মিটার বসানোর কাজ হবে। দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের প্রায় ১৪ কোটি টাকায় এই কাজ করা হবে। সেই অনুযায়ী শহরের প্রায় ১৪ হাজার জলের সংযোগে ওই মিটার বরাদ্দ করা হয়েছে। ঠিকাদারকে বরাতও দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৪ হাজার মিটার চলেও এসেছে। প্রথম ধাপে কাজ শেষের পরে বাকি এলাকায় জন্য মিটার কেনা হবে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার জানান, বোর্ডের বৈঠকে জল অপচয় রুখতে নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় জল প্রকল্পের মধ্যেই মিটার বসানোর খরচ ধরা ছিল। সেই মিটারের একাংশ আগেই কেনা ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘পাড়ার জলের কলে ট্যাপ লাগানোর পরে প্রথমে সচেতন করা হবে। তার পরেও ট্যাপ ভেঙে দেওয়া হলে ওই কল সিল করা হবে।”
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জল কর নেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছিলেন। তার পরে খড়্গপুর পুরসভাও জলকর নেওয়া বন্ধ করে। সেই অনুযায়ী জলের সংযোগে মিটার বসানো তো মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পরিপন্থী? যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মিটার বসানো হলেও জলকর নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই। মূলত জল অপচয় রুখতেই দ্বিতীয় জলপ্রকল্প অনুযায়ী এই মিটার বসানো হবে। যে সমস্ত বাড়িতে জলের সংযোগ রয়েছে সেখানে পুরসভার খরচে ওই মিটার বসবে। এক একটি পরিবারের মাসিক জল খরচের পরিমাণ বেঁধে দেওয়া হবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দিনে সর্বোচ্চ ৩৫ লিটার জল খরচ করতে পারে বলে জানতে পেরেছে পুরসভা। সেই মতোই হিসেব কষা চলছে। মিটারে হিসেবের বেশি পরিমাণ জল খরচ ধরা পড়লেই সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে সতর্ক করা হবে।
পুরসভার জল বিষয়ক পুর-পারিষদ তৈমুর আলি খান বলেন, “প্রথম পর্যায়ে ৩টি অঞ্চলে কাজ হবে। পরে বাকি ৭টি অঞ্চলেও মিটার বসানো হবে। পরিবার প্রতি হিসাব কষে মিটার বসিয়ে দেব। তার বেশি খরচ হলে সতর্ক করা হবে। এভাবেই আমরা জল অপচয় বন্ধ করতে চাইছি।”