অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। —ফাইল চিত্র।
অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার রাত থেকে মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে, অধ্যক্ষের অফিস ঘরের কিছু দূরে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সাত জন পিজিটি-কে (জুনিয়র ডাক্তার) সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছে। ওই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে চলছে অবস্থান। এই কর্মসূচির ফলে চিকিৎসা পরিষেবায় কোনও প্রভাব পড়েনি। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী বলেন, ‘‘আমরা একটা চিঠি দিয়েছি। ডিএমই-কে। ওঁরা শিক্ষানবিশ (পিজিটি)। ওঁদের বিষয়টি (সাসপেনশন প্রত্যাহার) দেখার অনুরোধ জানিয়ে। ওঁরা তো ডিউটিতে ছিলেন।’’ অধ্যক্ষের আশা, জুনিয়র ডাক্তারেরা অবস্থান প্রত্যাহার করবেন।
শনিবার রাত থেকে অবস্থানে যাঁরা শামিল হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই গাইনোকোলজি (স্ত্রী রোগ বিভাগ), অ্যানাস্থেশিয়োলজি বিভাগের। জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ বিক্ষোভ ছেড়ে উঠে কাজে যোগ দিলে তাঁদের জায়গায় অবস্থানে বসছেন অন্যেরা। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের সুপার, ডাক্তার-সহ সবমিলিয়ে ১৩ জন নিলম্বিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাত জন পিজিটি। ওই সাত জনের মধ্যে রয়েছেন প্রথম বর্ষের এক জন, দ্বিতীয় বর্ষের দু’জন, তৃতীয় বর্ষের চার জন। সাত জনের মধ্যে পাঁচ জনই স্ত্রী রোগ বিভাগের। বাকি ২ জন অ্যানাস্থেশিয়োলজির। কর্তব্যে ‘চরম গাফিলতি’র অভিযোগেই ওই সাত জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। অবস্থানে শামিল এক জুনিয়র ডাক্তার রবিবার বলেন, ‘‘আইনি যুদ্ধে নামছি। আইনি দিক দিয়েও মোকাবিলা করা হবে।’’ এর পাশাপাশি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি এবং অনুরোধও করেছেন অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তাররা।
‘সাসপেনশন’ প্রত্যাহারের দাবিতে এক সময়ে কর্মবিরতির ঘোষণা করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মেডিক্যালে কর্মবিরতির ছাপ অবশ্য এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। যদিও জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, আংশিক কর্মবিরতি হয়েছে। জরুরি পরিষেবাগুলিই চালু রাখা হয়েছে। শনিবার রাত থেকেই মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান শুরু হয়েছে। এ দিনও দিনভর এই কর্মসূচি চলেছে। সাসপেনশন প্রত্যাহারের বিষয়টি দেখার অনুরোধ জানিয়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা সংশ্লিষ্ট সকল জায়গায় ব্যক্তিগত ভাবে এবং সমবেত ভাবে চিঠি পাঠিয়েছেন। অবস্থানে শামিল এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘কোনও পিজিটি’র নামে এ ভাবে সাসপেনশনের চিঠি আসে না, আসতে পারে না। আগে তো শোকজ়। তার পরে তো সাসপেন্ড। শোকজ়ের আগে কাউকে সাসপেন্ড করাটা অন্যায়।’’ কাজে না গিয়ে অবস্থানে কেন? স্ত্রী রোগ বিভাগের এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘প্রসূতি বিভাগ চলছে। এটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এক মিনিটের জন্যও বন্ধ রাখা সম্ভব নয় এই বিভাগ। সেটা আমরা জানি। সিনিয়র ডাক্তারেরা রয়েছেন বিভাগে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের সাত জন সহকর্মীর নামে সাসপেনশনের চিঠি এসেছে। তাই আমরা কাজে যেতে ভয় পাচ্ছি।’’