বিজয় মাহাতোর গান অনুশীলন করছেন ইন্দ্রাণী মাহাতো। নিজস্ব চিত্র
তাঁকে বাদ দিয়ে ঝুমুর মেলার আয়োজনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন লোকশিল্পীদের একাংশ। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ইন্দ্রাণী মাহাতো সহ সব শিল্পীকে নিয়েই আজ, শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে দু’দিনের সরকারি ঝুমুর মেলা। মেলায় ৮৮ জন ঝুমুর শিল্পী দু’দিনে অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন। তবে মেলার মঞ্চে ঝুমুর গান পরিবেশনের সুযোগ পেলেও নিজের গান পরিবেশন করবেন না ইন্দ্রাণী। এমনই জানা গিয়েছে শিল্পীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার বিকেলে ইন্দ্রাণীকে অনুষ্ঠান পরিবেশনের সময় দেওয়া হয়েছে। ঝুমুর সম্রাট বিজয় মাহাতোর নামাঙ্কিত মেলার মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করার কথা জঙ্গলমহলের ‘নাইটিঙ্গল’-এর। ইন্দ্রাণীর ঘনিষ্ঠ মহল জানাচ্ছেন, ঝুমুর মেলায় তাঁকে নিয়ে বিতর্ক ওঠায় অত্যন্ত ব্যথিত শিল্পী মেলার মঞ্চে নিজের কোনও গানই পরিবেশন করবেন না। প্রয়াত ঝুমুর সম্রাট বিজয় মাহাতোর দু’টি গান গাইবেন ইন্দ্রাণী। ইন্দ্রাণীর গান শোতার জন্য শ্রোতাদের বিশেষ আগ্রহ থাকে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর ও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে আয়োজিত জঙ্গলমহল উৎসবে গত ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠান করেছিলেন ইন্দ্রাণী। জঙ্গলমহল উৎসবে সুযোগ না-পাওয়া শিল্পীদের নিয়ে পরদিনই জেলাশাসকের দফতরের সামনে ধামসা-মাদল বাজিয়ে বিক্ষোভ-জমায়েত করেছিল ‘জঙ্গলমহল ঝুমুর ও লোকশিল্পী সমন্বয় মঞ্চ’। এর পরেই প্রশাসন ঝুমুর মেলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু মঞ্চের একাংশ লোকশিল্পী গোঁ-ধরেন, ইন্দ্রাণী যেহেতু জঙ্গলমহল উৎসবে অনুষ্ঠান করেছেন, সেই কারণে ঝুমুর মেলায় তাঁকে রাখা যাবে না। প্রশাসনের সঙ্গে মঞ্চের প্রতিনিধিদের দফায় দফায় আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত হয়, ইন্দ্রাণীও ঝুমুর মেলায় গান পরিবেশন করবেন।
শুক্রবার নিজের বাড়িতে রেওয়াজের অবসরে ইন্দ্রাণী বললেন, ‘‘বিজয়কাকুর কাছে আমার গান শেখার সুযোগ হয়নি। তবে ছোটবেলা থেকে ওঁর গান শুনে এবং ওঁকে অনুসরণ করেই আমি আজ যতটুকু শিখতে পেরেছি। তাই প্রথম বর্ষের সরকারি ঝুমুর মেলায় বিজয়কাকুর গান গেয়েই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাব।’’ তাঁকে নিয়ে বিতর্কের কারণেই কী নিজের গান গাইছেন না? ইন্দ্রাণীর জবাব, ‘‘আমি অগ্রজ ও সমকালীন সব শিল্পীকেই সম্মান করতে শিখেছি। তাই এই নিয়ে বেশি কিছু না বলাই ভাল।’’
কুড়মি উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘ইন্দ্রাণী অনুষ্ঠানে কী গান গাইবেন সেটা তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’’