মাওবাদী শীর্ষনেতা কিসেনজির মৃত্যুস্থল জামবনির বুড়িশোলে স্বাভাবিক জনজীবন। নিজস্ব চিত্র।
বুড়ি ছোঁওয়া উন্নয়নের ক্ষোভকে সঙ্গী করেই জঙ্গলমহলে এসেছিলেন মাওবাদী শীর্ষনেতা কিসেনজি। রাজ্যে পালাবদলের পর বুড়িশোলের জঙ্গলে যৌথবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। আজ থেকে ঠিক এক যুগ আগে। ২৪ নভেম্বর, ২০১১। এখন সে সব অতীত। কেটেছে ধারাবাহিক সন্ত্রাসের দুঃস্বপ্ন। জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে চাঙ্গা হয়েছে পর্যটন।আজ, শুক্রবার আরও একটা ২৪ নভেম্বর। উদ্ধত আগ্নেয়াস্ত্র, গামছার আড়ালে থাকা কিসেনজির মৃত্যুদিন। বুড়িশোলের জঙ্গলের ‘এনকাউন্টার’ দু’দণ্ড শান্তি দিয়েছিল তৎকালীন প্রশাসনকে। কিসেনজির মৃত্যুর পর ক্রমে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে জঙ্গলমহল। তার পর থেকে রাজ্য সরকার বার বারই দাবি করে এসেছে জঙ্গলমহলে মাওবাদী নেই। যদিও বিভিন্ন সময়ে মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার মিলেছে। পুলিশের তদন্তে পরে দেখা যায় ব্যক্তিগত শত্রুতা অথবা কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যে মাঝে মধ্যে ভুয়ো পোস্টার দেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা জানাচ্ছেন, যারা এ ধরনের ভুয়ো পোস্টার দিয়ে আমজনতাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতো তেমন ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তরা এখনও জেলবন্দি। এ ছাড়াও জেলা পুলিশ সুপার বলছেন, ‘‘শান্তি ফেরায় চাঙ্গা হয়েছে পর্যটন। পুলিশের উদ্যোগে নিবিড় জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়মিত হচ্ছে। প্রতিটি গ্রামের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ রয়েছে। পুলিশের উদ্যোগে অবৈতনিক শিক্ষাদানের কেন্দ্র, স্বাস্থ্যশিবির, খাদ্য বিতরণ, যুবক-যুবতীদের চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি শিবির সহ নানা ধরনের সামাজিক কর্মসূচি নিয়মিত হচ্ছে। এছাড়াও পুলিশের নাকা চেকিং, পেট্রোলিং ও নিরন্তর নজরদারিও রয়েছে।’’
বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, সন্ত্রাসের ভয়াবহ স্মৃতি এখন একেবারেই ফিকে। কেউ ভুলেও আর অতীতকে মনে রাখতে চান না। বেলপাহাড়ির ডগমনি বেসরা, ঝাড়গ্রামের বিমলা মাহাতোদের কথায়, ‘‘সেই সব ভয়াবহ দিন আর মনে রাখতে চাই না। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই।’’