ফল কেনার ভিড়। ঘাটালের কলেজ মোড়ে। নিজস্ব চিত্র।
আজ, রবিবার জামাইষষ্ঠী। তার আগের দিনই চড়া থাকল বাজার।
বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণের এই দিনটা মূলত জামাইদের রসনাতৃপ্তির। মাছ, মাংস থেকে ফল, মিষ্টি সব কিছুই থালা ভরে দেওয়া হয় জামাইদের পাতে। তবে শনিবার বাজারে দাম দেখে অনেককেই ফর্দ কাঁটছাঁট করতে দেখা গিয়েছে। এদিন মেদিনীপুর বাজারে কাতলা মাছের কিলো ছিল ২৩০- ২৫০ টাকা। ভেটকি মাছ ৩৮০-৪০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৫৫০- ৬০০ টাকায় বিকিয়েছে। বড় মাপের ইলিশের দাম ছিল কিলো প্রতি দেড় হাজার টাকার উপরে। কাটা মুরগি ২৪০ টাকা। খাসি ৭০০ টাকা। এক-এক বাজারে দামের খানিক হেরফের ছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, রবিবার আরও দাম বাড়তে পারে। মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় বলেন, ‘‘এই পার্বণের সময়টায় দাম একটু চড়া থাকে।’’ বাজারে আসা মৌসুমী দাস, চন্দনা মজুমদাররা বলছিলেন, ‘‘অন্য দিনের থেকে দাম আজকে একটু বেশিই।’’
শনিবার ঘাটালের একাধিক বাজারে ইলিশ ৮০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ টাকা, বড় সাইজের দেশি মাছ ২০০-২৫০ টাকা, কাতলা ২৫০-৩০০ টাকা কিলোতে বিক্রি হয়েছে। খাসির মাংস ৬৫০-৭০০ ও পাঁঠার মাংস ৭০০ টাকা কিলো দরে বিকিয়েছে। ঘাটাল শহরের কুশপাতার বাসন্তী মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘বাজারে দাম একটু বেশি। তবে জামাইষষ্ঠী তো আর প্রতিদিন হবে না, তাই দাম দেখলেও চলবে না।’’ গড়বেতার বাজারে জামাইষষ্ঠীর বাজার করতে বেরিয়েছিলেন সুনীল ঘোষ। তিনি বললেন, ‘‘ভাবলাম জামাইষষ্ঠীর দিন দাম বাড়ার আগে শনিবার বেশি করে মাছ কিনে রেখে দেব। কিন্তু যা দাম! যা ভেবেছিলাম তার অর্ধেক কিনেছি।’’
খড়্গপুরের বাজারেও জিনিসপত্র অগ্নিমূল্য। সস্তা হবে বলে জামাইষষ্ঠীর আগের দিন বাজারে বেরিয়ে হা পিত্যেশ করেছেন অনেকেই। গোলবাজার ও খরিদা বাজারে কয়েকজন বিক্রেতার কাছে মজুত করা বড় মাপের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৮০০-২০০০ টাকা দরে। ভেটকি, গলদা চিংড়িও দাম বেশ চড়া ছিল এদিন। দাঁতন, কেশিয়াড়ির বাজারগুলির ছবিও ছিল একই রকম।
দাম বেশি ছিল ফলেরও। তুলনায় স্বস্তি দিয়েছে আনাজ বাজার। এদিন আনাজের দাম কমই ছিল গড়বেতার তিনটি ব্লকের বাজারগুলিতে। ঘাটাল মহকুমার বাজারগুলিতেও এদিন নাগালের মধ্যে ছিল আনাজ। বড় বেগুন ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা কিলো দরে বিকেয়েছে।
ঝাড়গ্রাম শহরেও জামাইষষ্ঠীর আগে খাসির মাংস ৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগির মাংস ২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকা কিলো ছিল। খাসির মাংস বিক্রেতা সাবির আলি বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে খাসির মাংসের দাম বেড়ে ৭৫০ টাকা হয়েছে, তাই আর দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।" ঝাড়গ্রামে এদিন ইলিশ ২৪০০-২৫০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে। গলদা চিংড়ি, মাগুর, ভেটকি, পাবদার দামও ছিল বেশ চড়া। জুবিলি বাজারের মাছ ব্যবসায়ী বাবলু রাউত মানছেন, ‘‘জামাইষষ্ঠীর জন্য মাছের দাম এদিন থেকেই বেড়েছে। অনেকে দাম বাড়ার ভয়ে শনিবারই বাজার করেছেন।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।