কংক্রিটের পিলারই সার। জমিতে এখন চরে বেড়ায় গরু। নিজস্ব চিত্র
এক দশক হতে চলল শিলান্যাস হয়ে গিয়েছে. তবু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত আইটিআই কলেজের ভবন নির্মাণ শুরুই হয়নি। কাঁথি-৩ ব্লকের দুরমুঠ এলাকার যে জমিতে আইটিআই কলেজ গড়ে ওঠার কথা, সেখানে এখন গবাদিপশুর বিচরণক্ষেত্র। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত আইটিআই কলেজ ওখানে আদৌ নির্মাণ হবে কিনা, সে ব্যাপারেও তাদের কাছে কোনও খবর নেই প্রশাসনের দাবি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি-৩ ব্লকের দেশপ্রাণ কলেজ লাগোয়া দুরমুঠ মৌজায় আইটিআই কলেজ গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেইমত ২০১১ সালে প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। কিন্তু, আট বছর বাদেও ওই আইটিআই কলেজ ভবন নির্মাণ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। কেবলমাত্র হাতেগোনা গোটা চল্লিশেক কংক্রিটের স্তম্ভ তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। আর কোনও কাজ হয়নি। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, একাধিকবার প্রশাসন এবং কারিগরি শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা ওই এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তারপর কিছুই হয়নি। ভবন না গড়ে ওঠায় কংক্রিটের স্তম্ভগুলিতে ছাগল বেঁধে স্থানীয়দের একাংশ ওই জমিকে গোচারণভূমি বানিয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আইটিআই কলেজ তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়ে গিয়েছিল। টেন্ডার ডেকে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়েছিল। তারা প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর ওই এলাকায় আর কাজ করতে রাজি হয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। তারপর আর নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়নি। কাঁথি-৩ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে কারিগরি শিক্ষা দফতর থেকে নির্মীয়মাণ আইটিআই কলেজ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়। সেখানেও তারা কলেজের ভবন নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ বলে রিপোর্ট পাঠায়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, প্রশাসনই আইটিআই কলেজ নির্মাণে উদ্যোগী হয়নি। সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন, ‘‘বাম জমানায় আইটিআই কলেজ গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় মানুষ জমি দিয়েছিল। কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ঠিকাদার সংস্থার কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করতে চাইছিল। তাই তারা কাজ ছেড়ে চলে যায়।’’
কাঁথি-৩ এর বিডিও নেহাল আহমেদ বলেন, ‘‘ওই নির্মীয়মাণ আইটিআই কলেজ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তারপর আমরা একটি রিপোর্ট জেলার কারিগরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে পাঠিয়েছি।’’
এ ব্যাপারে হলদিয়া আইটিআই-এর অধ্যক্ষ জওহরলাল মুর্মু বলেন, ‘‘নির্মীয়মাণ ওই কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি কী, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ যদিও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বনশ্রী মাইতির দাবি, ‘‘ওই আইটিআই কলেজটি আমাদের সময় গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। তবে সাময়িক অসুবিধায় কাজ বন্ধ ছিল। তবে দ্রুত ওই আইটিআই কলেজ নির্মাণের কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে।’’