খড়িবেড়িয়া গ্রামে আইওসি-র দল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে আসছিল গ্যাস। সেই গ্যাসে সপ্তাহ দু’য়েক ধরে দিব্যি চলছিল গ্রামবাসীদের রান্নাবান্না। খবর সামনে আসতেই এলাকায় গেলেন ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) দল। গ্যাসের প্রকৃতি খতিয়ে দেখার জন্য নমুনা সংগ্রহ করলেন।
সুতাহাটার গুয়াবেড়িয়া অঞ্চলের খড়িবেড়িয়া গ্রামে গত আগস্টে একটি নলকূপ খনন করা হয়েছিল। সেই নলকূপের পাশেই গ্যাস বেরোচ্ছিল বলে দাবি। দেশাইল দিলে তাতে আগুনও জ্বলছিল। এর পরেই মাটিতে পাইপ পুঁতে তাতে গ্যাসের ওভেন লাগিয়ে রান্নাবান্না শুরু করেছিলেন গ্রামবাসী। প্রাথমিক ভাবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন গ্যাসটি মিথেন।
হলদিয়া রিফাইনারি সূত্রের খবর, শনিবার ঘটনাস্থলে যায় তাদের বিশেষজ্ঞদের একটি দল। তারা গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করেছে। ল্যাবরেটারিতে পরীক্ষা করে ওই গ্যাসের প্রকৃতি জানানো হবে। গ্যাসের চাপও মাপা হয়েছে এ দিন। তবে আইওসি’র দাবি, ওই গ্যাসের সঙ্গে মাটির তলা দিয়ে যাওয়া তাদের সংস্থার পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা গ্যাসের কোনও সম্পর্ক নেই।
আইওসি’র এক আধিকারিক জানান, জেলাশাসক পার্থ ঘোষের কাছ থেকে গ্যাস বেরনোর বিষয়টি জানার পরে একটি প্রতিনিধিদল এলাকায় পাঠানো হয়েছিল। প্রথমেই দলের সদস্যেরা দেখে নেন যে, ওই গ্যাসের উৎস কোনও পাইপলাইন কি না। তবে দেখা যায়, ঘটনাস্থল থেকে সাত কিলোমিটার দূরে রয়েছে আইওসি’র পাইপ লাইন। আরও ওই লাইনে লিক হওয়ার কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই।
গ্যাসটি মিথেন জাতীয় কিছু হতে পারে বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান প্রতিনিধি দলেরও। তবে যদি মিথেন জাতীয় গ্যাস হয়, তাহলে কিছু দিনের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যদি জীবাশ্ম জ্বালানী হয়, তাহলে বিষয়টি অন্য রকম দাঁড়াবে। সেই পরিস্থিতিতে আরও বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হবে। আপাতত দিন দশেক দেখা হবে যে ওই গ্যাস বেরচ্ছে কি না।
আইওসি’র সঙ্গে এ দিন ঘটনা স্থলে যান হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) প্রতিনিধিরা। আপাতত খড়িবেড়িয়া গ্রামে মাটির নীচ থেকে বেরনো গ্যাসে রান্না বন্ধ করার নোটিস দিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শেখ শাহনেওয়াজ বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ মত গ্রামবাসীদের রান্না বন্ধ করা হয়েছে।’’ আইওসি’র আধিকারিক সমরেন্দ্র নাথ ঝাঁ বলেন, ‘‘আমরা জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছে।’’