অখিল গিরি এবং তরুণ জানা। নিজস্ব চিত্র।
আচমকাই প্রকাশ্যে চলে এল কাঁথির তৃণমূল শিবিরের গোষ্ঠী কোন্দল। শুক্র ও শনিবার তৃণমূলের দুই বিজয় সম্মিলনীর মঞ্চে একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুঁড়িতে নেমে পড়েন যুযুধান দুই গোষ্ঠীর নেতারা। এক দিকে রয়েছেন অধিকারী পরিবারের বিদায়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের এক্কেবারে সামনের সারিতে চলে আসা অখিল গিরি। তিনি বর্তমানে রামনগরের বিধায়কের পাশাপাশি রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী। এবং তাঁর ছেলে সুপ্রকাশ গিরি যিনি বর্তমানে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি। অন্য দিকে রয়েছেন কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ জানা, কাঁথি ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ গায়েন প্রমুখরা।
শুক্রবার কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকে বসন্তিয়া স্কুল মাঠে আয়োজিত মেগা বিজয় সম্মিলনীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আচমকাই অখিল গিরি ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে সরব হন তরুণ জানা ও তাঁর সঙ্গীরা। এই মঞ্চে আবার হাজির ছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণ কুমার মাইতি, প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি পার্থ সারথি মাইতি-সহ একধিক জেলা নেতৃত্ব। বিজয় সম্মিলনী মঞ্চে তাবড় তাবড় তৃণমূল নেতাদের দেখা গেলেও দেখা যায়নি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে নির্বাচিত মন্ত্রী অখিল গিরিকে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর অনুপস্থিতির বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একটি গুঞ্জনও শুরু হয়ে গিয়েছে।
অন্য দিকে, অখিল ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোপ দাগতে শুরু করেন তরুণ। তাঁর কথায়, “গত নির্বাচনের আগে রামনগর বিধানসভা ছেড়ে আর কোথাও বার হননি অখিলবাবু। তাই তিনি নিজের চরকায় আগে তেল দিন, অপরের চরকায় তেল দেওয়া বন্ধ করুন।”
শনিবার রামনগরে পানমাণ্ডিতে মহিলা তৃণমূলের বিজয় সম্মিলনীতে গিয়ে তরুণের কটাক্ষের জবাব দেন অখিল। তিনি বলেন, “তরুণ বাবু ও প্রদীপবাবু যে শিবিরে ছিলেন, সেই শিবির থেকে অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। তারা হচ্ছে চালুনি। নিজেদের চেহারাটা আয়নায় দেখলে তা প্রমাণ হয়ে যাবে। তরুণবাবু তার নিজের ব্লকটা সামলাক। প্রদীপ বাবু নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখুক। তাহলে প্রমাণ হয়ে যাবে কে দুর্নীতিগ্রস্ত, কে দুর্নীতিগ্রস্ত নয়।” তবে এই বিতর্ক প্রসঙ্গে তৃণমূলের কাঁথি সংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি বলেন, “এ ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করাই ভাল। এতে আখেরে দলের ক্ষতি হবে।”