—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
জেলা জুড়ে চলছে দলের ব্লক স্তরের কর্মশালা। হচ্ছে অঞ্চল-ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন। সেখানে হাজির থাকছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। অথচ, অধিকাংশ জায়গাতেই গরহাজির সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান। তা হলে কি দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে 'দূরত্ব' তৈরি হচ্ছে সাংগঠনিক চেয়ারম্যানের? চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে।
কয়েক মাস আগেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক এবং কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এবং চেয়ারম্যান পদে রদবদল ঘটে। কাঁথি সংগঠনিক জেলায় নতুন সভাপতি হন পীযূষ কান্তি পণ্ডা। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন গতবারের জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি। পীযূষ পটাশপুর -১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি এবং তরুণ এগরার বিধায়ক। যদিও পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠিত হয়নি। তবু সম্প্রতি কাঁথিতে নতুন জেলা কার্যালয় খুলেছে শাসক দল। শিয়রে লোকসভা ভোট।
কাঁথিতে গেরুয়া শিবিরকে টক্কর দিতে মাঠে নেমে পড়েছে ঘাস ফুল শিবির। কিন্তু সেই প্রস্তুতিতেই ফাটলের 'ইঙ্গিত' মিলেছে তৃণমূলের অন্দরে। পীযূষের বহু কর্মসূচিতেই দেখা যায়নি সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান তরুণ মাইতিকে। তৃণমূলের কর্মসূচিতে দলের জেলা স্তরের দুই শীর্ষ পদাধিকারীকে বেশির ভাগ সময় একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে না বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
যেমন মঙ্গলবার বিকেলে ভগবানপুর -২ ব্লকের কর্মীদের নিয়ে একটি কর্মশালা আয়োজন করা হয়। সেখানে গরহাজির ছিলেন তরুণ। বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক সহ শাসক দলের জেলা সভাপতি। একই রকম ভাবে চন্ডীপুর, খেজুরির দু’টি ব্লক এবং কাঁথির একাধিক ব্লকে কর্মসূচিতে ছিলেন না তরুণ। এ বিষয়ে পীযুষ বলছেন, "তরুণ এক দিকে এগরার বিধায়ক। অন্য দিকে রাজ্যের বিধানসভার বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির সঙ্গে জড়িত। তাই উনি ব্যস্ত থাকেন।" যদিও তৃণমূলের অন্দরের খবর, তরুণকে দলের কর্মসূচির বিষয়ে একেবারে শেষ মুহূর্তে জানানো হয়েছিল বলে তিনি যাননি।
তরুণ জেলা সভাপতি পদ থেকে সরতেই নিজের মতো করে সংগঠনে পীযূষ ঘুঁটি সাজাচ্ছেন বলে দলের একাংশের মত। তরুণের আমলে যাঁরা ব্লক সভাপতি ছিলেন তাঁদের কয়েক জনকে বাদ দেওয়া হতে পারে বলেও জল্পনা দলের ভিতরে চলছে। এই পরিস্থিতিতে দলের দুই শীর্ষ পদাধিকারীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে বলেই তৃণমূলে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও তা অস্বীকার করে তরুণ বলছেন," আমাদের দলের নেত্রী এক জনই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"
তা হলে অধিকাংশ কর্মসূচিতে কেন তাঁদের একত্র দেখা যায় না? তরুণের যুক্তি,"দলের যাবতীয় কর্মসূচির একটি তালিকা আমাকে পাঠানো হয়, ঠিক। তবে নিজের এলাকায় সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় সব জায়গাতে যাওয়ার সম্ভব হয় না।" তবে শাসক দল কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তাপস কুমার দোলুই বলছেন,"তৃণমূল আসলে প্রাইভেট কোম্পানি। ওদের মধ্যে এ রকম হবেই।"