সৈকতে এ ভাবেই অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে পর্যটকদের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
শীতের মরসুম শুরু হতেই পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে জুনপুট সংলগ্ন কাঁথি-১ ব্লকের বগুড়ান জলপাই সৈকতে। আর পর্যটকদের একাংশের ‘উন্মাদনা’য় হারিয়ে যেতে বসেছে ‘উপকূলের ইঞ্জিনিয়ার’ লাল কাঁকড়া। পাশাপাশি, দেদার পিকনিকের ফলে উপকূল এলাকা দূষিত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। তাই সপ্তাহ ঘুরলেই বড়দিন এবং তার পরে ইংরেজি নববর্ষে পর্যটকদের হাত থেকে সৈকত এবং সংলগ্ন এলাকা রক্ষার তাগিদে এগিয়ে এলেন স্থানীয়েরা। ‘কোস্টাল প্রটেকশন ক্যাম্পেইন’ নামে একটি পরিবেশ বাঁচাও কমিটির ব্যানারে তাঁরা বৈঠক শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগেও বগুড়ান জলপাই সৈকতে ব্যাপক সংখ্যক লাল কাঁকড়া দেখা যেত। কিন্তু সৈকতের উপর যথেচ্ছভাবে পর্যটকেরা মোটরবাইক এবং গাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে সৈকতের বালি সরে গিয়ে কাদামাটি বেরিয়ে পড়ছে। গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে শয়ে শয়ে লাল কাঁকড়া মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। উপকূল এলাকায় বাসিন্দা রঞ্জিত বর বলেন, ‘‘লাল কাঁকড়া প্রাকৃতিক বিপদের সংকেত বয়ে বেড়ায়। নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণিঝড়, সুনামির মতো বিপদের পূর্বাভাস লাল কাঁকড়ার গতিবিধি থেকে বুঝতে পারা যায়। কিন্তু ওদের আনাগোনা সৈকতে কমে গিয়েছে।’’
স্থানীয়দের দাবি, বগুড়ান জলপাই সৈকতে প্রশাসনিক নজরদারি নেই। এভাবে চললে উপকূলের পরিবেশের সমূহ ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের নেতা দেবাশিস শ্যামল বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহ থেকেই পর্যটনের মরসুম শুরু। নির্জন এলাকা হওয়ায় বগুড়ান জলপাইতে বহু পর্যটক পিকনিক করতে আসবেন। স্থানীয় উদ্যোগে সৈকত বাঁচানোর জন্য পর্যটকদের কাছে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে যাতে পর্যটকদের সৈকত রক্ষার ব্যাপারে সচেতন করা হয়, সে জন্য জেলাশাসকের কাছে আর্জি জানাব।’’ কাঁথির মহকুমা শাসক আদিত্য বিক্রম মোহন হিরানি বলেন, ‘‘আগামী দিনে সৈকত এবং উপকূল এলাকা রক্ষার জন্য প্রশাসনিক দিক থেকে কী কী করা সম্ভব, সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করব।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বন আধিকারিক অনুপম খান বলছেন, ‘‘ওই এলাকাতে আমরাও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ব্যাপারে সচেষ্ট হচ্ছি।’’