—প্রতীকী চিত্র।
সমাজমাধ্যমে পূর্ব পরিচিত এক উচ্চ পদস্থ সরকারি আমলার ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পেয়ে অ্যাকসেপ্ট করেছিলেন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা বিশিষ্ট ঝুমুর সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রাণী মাহাতো। সেই বন্ধুত্বের ফাঁদে পড়ে ৪০ হাজার টাকা খোয়ালেন শিল্পী।
ওই আমলার সমাজমাধ্যমের প্রোফাইলটি যে ভুয়ো, সেটা ইন্দ্রাণী বুঝতেই পারেননি। ওই প্রোফাইল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ইন্দ্রাণীকে ভুয়ো আমলা মেসেজ করে জানান, তাঁর পরিচিত এক সিআরপি অফিসার বদলি হয়ে যাচ্ছেন। ওই সিআরপি অফিসার তাঁর আসবাবপত্র কম দামে বিক্রি করে দেবেন। যাঁর নামে ওই প্রোফাইল, সেই আমলা একসময় ঝাড়গ্রামে ছিলেন। এখন তিনি উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। ফলে পরিচিত আমলার এমন প্রস্তাবে রাজিহন ইন্দ্রাণী।
এরপরই সন্ধ্যায় এক অপরিচিত নম্বর থেকে ইন্দ্রাণীকে ফোন করে এক ব্যক্তি নিজেকে সিআরপি অফিসার পরিচয় দেন। ওই ব্যক্তি জানান, তিনি দুর্গাপুর থেকে জম্মু বদলি হয়ে যাচ্ছেন। যাত্রাপথে ঝাড়গ্রাম হয়ে তিনি যাবেন। হোয়াটস্অ্যাপে ইন্দ্রাণীকে দামি সোফাসেট, চায়ের টেবল, খাট, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন-সহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের ছবি পাঠানো হয়। ৭০ হাজার টাকায় সেগুলি কিনতে রাজি হয়ে যান ইন্দ্রাণী। ভুয়ো সিআরপি’র ব্যক্তিটি হোয়াটঅ্যাপে কিউআর কোড পাঠিয়ে কিছু টাকা অগ্রিম চান। ওই হোয়াটস্অ্যাপের ডিপিতে সিআরপির উর্দি পরা ব্যক্তিটির ছবি থাকায় ইন্দ্রাণীও সরল বিশ্বাসে কিউআর কোড স্ক্যান করে ৪০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর ওই অপরিচিত নম্বর থেকে বাকি টাকা পাঠানোর জন্য চাপদেওয়া হয়।
এরপর বিষয়টি পরিজনদের জানান ইন্দ্রাণী। ওই আমলার সমাজমাধ্যমের প্রোফাইল সার্চ করতে গিয়ে দেখা যায়, যে প্রোফাইল থেকে ইন্দ্রাণীকে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল, সেই প্রোফাইলটি ভুয়ো। ইন্দ্রাণী জানতে পারেন, গত কয়েক মাসে তাঁর মতো আরও অনেকে সমাজমাধ্যমে এ ধরনের মেসেজ পেয়েছেন। এরপরই ইন্দ্রাণী বুঝে যান তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। রাতেই ঝাড়গ্রাম থানা এবং ঝাড়গ্রাম সাইবার-ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়েরকরেন ইন্দ্রাণী।
ইন্দ্রাণী বলছেন, ‘‘মেসেজে উনি আমাকে তুমি বলে সম্বেধন করায় ভেবে নিই, ওই আমলাই মেসেজ করেছেন। কারণ একমাত্র উনিই আমাকে তুমি বলে সম্বোধন করতেন।’’ ঝাড়গ্রাম জেলার ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জনসাধারণকেও সতর্ক-সচেতন হতে হবে।’’