এই জলাশয়েই হচ্ছে প্রকল্প।
বড় পুকুর। জাল দিয়ে পরপর বেশ কিছু অংশে ভাগ করা। একই পুকুরের মধ্যে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাছের। একেই বলে পেন কালচার।
পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রথম ‘পেন কালচার’ ও ‘মহিলা ফিশ প্রোডাকশন’ গ্রুপ হল কেশিয়াড়িতে। বুধবার ব্লকের কুসুমপুর পঞ্চায়েতের বেহেরাসাইতে একটি মৎস্য ক্ষেত্রের উদ্বোধন হল। ২০ জন মহিলা এই জলাশয় ও মাছ চাষের দায়িত্বে আছেন। দীর্ঘদিন প্রায় মজে যাওয়া অবস্থায় ছিল সরকারি ওই জলাশয়।
রাজ্য সরকারের নতুন নিয়মে সরকারি জলাশয়কে ব্যবহারের ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশ অনুসারে মসরা নামের বড় জলাশয়টিকে মাছ চাষের উপযোগী করা হয়। মহিলাদের মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়া হয়েছে মসরা মহিলা ফিশ প্রোডাকশন গ্রুপ।
বুধবার এর সূচনায় জেলা-সহ মৎস্য আধিকারিক পিয়াল সর্দার, ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক মৃণালকান্তি দাস, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সোনালি ঘোড়াই-সহ ব্লকের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এ দিন রুই, কাতলা ও মৃগেল মিলিয়ে ২৫ হাজার চারামাছ ছাড়া হয়েছে। সঙ্গে মাছ চাষের জন্য মহিলাদের একটি নৌকা, জাল, হাঁড়ি, মাছের খাবার, চুন দেওয়া হয়েছে।
জলাশয়টি ৭৮০ ফুট লম্বা ও ৬৫ ফুট চওড়া। চব্বিশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পে পাঁচটি ভাগে ভাগ করে জলাশয়টি তৈরি করা হয়েছে। এতে সহজেই মাছের রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে। মৎস্য দফতর জানাচ্ছে, পরে কই, মাগুর, তেলাপিয়ার চাষ করা যাবে। জেলা মৎস্য সহ-অধিকর্তা পিয়াল সর্দার বলেন, ‘‘সরকারি জলাশয়গুলিকে ফেলে না রেখে মাছ চাষে ব্যবহার করা হবে। জেলায় মহিলাদের নিয়ে প্রথম এই চাষ শুরু হল। তাঁরা স্বনির্ভর হতে পারবেন।’’
ব্লকের মৎস্য আধিকারিক মৃণালকান্তি দাস জানান, মহিলারাই মূলত এর সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। মৎস্য দফতর সহায়তা করবে। শুধু মহিলারা কেন? তাঁর জবাব, ‘‘সরকারের নির্দেশ মতোই মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।’’ মহিলারাই মাছের পরিচর্যা, খাবার দেওয়া, জল পরিষ্কার রাখা এবং জালে মাছ ধরার কাজ করবেন। মহিলা মৎস্য গোষ্ঠীর অর্নালি মুদি, জয়শ্রী মহাপাত্রেরা বলছেন, ‘‘বেশ কয়েকবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াব। সংসারের অভাবও কমবে।’’