চিহ্নিত জায়গায় ঝাঁপ দেন ওই পড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র
কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই আইআইটি চত্বরে আলাদা কোয়াটার্সে ছেলের সঙ্গে থাকছিলেন মা। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সেন্টারে চলছিল কাউন্সেলিংও।
মঙ্গলবারই আইআইটির মিড-সিমেস্টার শেষ হয়েছে। পরের দিন, বুধবারই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলের (হস্টেল) তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে গেলেন ‘ম্যাথেমেটিক্স অ্যান্ড কম্পিউটিং’ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়া। জখম অবস্থায় ওই পড়ুয়াকে প্রথমে আইআইটির নিজস্ব বিসি রায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশও। পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তার কোমরের নীচের অংশে চোট লেগেছে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে ওই পড়ুয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে মনে হচ্ছে। ওই পড়ুয়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।”
ঘটনাচক্রে ২০১৭ সালের অক্টোবরে এই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলের তিনতলার বারান্দা থেকেই ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন নিখিল ভাটিয়া নামে মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক ছাত্র। ওই ছাত্র থাকতেন বিদ্যাসাগর হলে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কথায়,‘‘ আমরা নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আইআইটির সঙ্গে কথা বলব।” আর খড়্গপুর আইআইটির রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলছেন, “কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলে কেন গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
‘ম্যাথেমেটিক্স অ্যান্ড কম্পিউটিং’ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়া মূলত নেহেরু হলের আবাসিক। ভৃগুনাথ জানিয়েছেন, ওই ছাত্র অসুস্থ ছিলেন। তাই অনুমতি সাপেক্ষে কয়েকমাস ধরে মায়ের সঙ্গে কোয়ার্টার্সে থাকতেন। আইআইটি সূত্রের খবর, এ দিন তিনি লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলের তিনতলায় উঠে পড়েন। তার পরে বারান্দা থেকে ঝাঁপ দেন। এমনকি, সিসিটিভি ক্যামেরাতেও সেই ঝাঁপ দেওয়ার ছবি ধরা পড়েছে বলে দাবি পুলিশের। ওই পড়ুয়ার সহপাঠী শুভম মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি লাল বাহদুর শাস্ত্রী হলে থাকি। কিন্তু ও নেহরুতে থাকে। তবে ঘটনাটি আমাদের হলে ঘটেছে। আসলে মিড-সিমেস্টার শেষ হওয়ায় এখন একটু হলগুলি ফাঁকা। আমি সকালে ক্লাসে চলে গিয়েছিলাম। পরে শুনেছি এই ঘটনা। কেন, কীভাবে হয়েছে বলতে পারব না। ভিতরে ওর কী চলছিল জানি না। উপর থেকে তো স্বাভাবিকই মনে হয়।’’
মানসিক বিপর্যস্ত পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কাউন্সেলিং সেন্টার। সাধারণ গোপনীয়তা ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে এড়িয়ে চলেন ওই সেন্টার। তবে ওই পড়ুয়া সেই সেন্টারে যেতেন। মিড সিমেস্টারের পর এ দিন থেকে ছিল ক্লাস। আইআইটি সূত্রের খবর, সেই ক্লাসে যাওয়ার আগেই ওই পড়ুয়া উঠে যান লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হলের তিনতলায়।