এই বাড়িতেই হয়েছে বিস্ফোরণ। — নিজস্ব চিত্র।
আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল গোটা এলাকা। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, হঠাৎ তীব্র বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায় গ্রামে। বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে গ্রামের রাস্তায় ছিন্নভিন্ন দেহ ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে বলেও স্থানীয়েরা জানিয়েছেন। পরে জানা যায়, ওই ঘটনায় নয় জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের জেরে বাজি কারখানাটি সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জখমদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিকটবর্তী হাসপাতালে। এ নিয়ে প্রাথমিক ভাবে আনন্দবাজার অনলাইনকে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘ওড়িশা সীমানা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে একটা বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানে বাজি তৈরি হচ্ছিল। বিস্ফোরণের জেরে এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন চার জন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে।’’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এগরা থানার পুলিশ। ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। বিস্ফোরণের জেরে আগুন লেগে যায় একটি বাড়িতে। বেরোতে থাকে ধোঁয়াও। কানফাটানো শব্দ শুনে বেরিয়ে আসেন আশপাশের বাসিন্দারা। পুলিশের পাশাপাশি, ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের ইঞ্জিনও। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে পোশাক ছিঁড়ে দেওয়ারও। পুলিশ জানিয়েছে, বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে এর পিছনে অন্য কিছু রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ নিয়ে এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘ওখানে বাজি কারখানা ছিল বলে খবর পেয়েছি। পুলিশ আগেই তল্লাশি করে বন্ধ করেছিল। তার পরেও লুকিয়ে কারখানা চলছিল। কত জন মারা গিয়েছেন তা এখন বলতে পারব না। প্রশাসনকে বলব কড়া হাতে দমন করতে। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ ওই ঘটনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, ওই কাণ্ডে তদন্ত করবে সিআইডি। তবে এনআইএ তদন্তে আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষ দিকে কাঁথির ভগবানপুর-২ ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রামেও বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় এক তৃণমূল নেতা-সহ তিন জনের। তার আগে পূর্ব মেদিনীপুরেরই পশ্চিম ভাঙনমারি গ্রামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। তার জেরে মৃত্যু হয় এক তৃণমূল কর্মীর। জখম হন অনেকে।