ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, সেই চাকরি পাচ্ছেন অনামিকা বিশ্বাস রায়। ফাইল চিত্র।
অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিলের পর ববিতা সরকারের চাকরিও বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেই চাকরি এ বার পাচ্ছেন অনামিকা বিশ্বাস রায়। সুখবর পেয়ে আনন্দে আপ্লুত অনামিকা মুখ খুললেন আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে।
অনামিকা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে তিনি এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে আছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এটাই হয়তো আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন। আমি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে প্রথম এই খবর পেয়েছি। খুব আনন্দ হচ্ছে। একজন চাকরিপ্রার্থীর কাছে চাকরি পাওয়ার চেয়ে ভাল খবর তো আর কিছু হয় না।’’
অনামিকা জানান, তিনি যে চাকরি পাবেন, সে বিষয়ে প্রথম থেকেই আশাবাদী ছিলেন। বলেন, ‘‘আমি কখনও আশাহত হইনি। আমি জানতাম, চাকরিটা আমি পাবই। চাকরির মেধাতালিকায় আমার নাম এবং ববিতার নাম পর পর ছিল। আমি ২১ নম্বরে ছিলাম। ববিতা ছিল ২০-তে। অঙ্কিতা আসার পর আমাদের র্যাঙ্ক পিছিয়ে যায়। অঙ্কিতার চাকরি বাতিলের পর তা মেধাতালিকা অনুযায়ী পায় ববিতা। কিন্তু আমি পরে দেখি, ববিতার নম্বর আসলে আমার চেয়ে কম। ও ২ নম্বর কম পেয়েছিল। তাই চাকরিটা আমারই পাওয়ার কথা। তার পর আমি আদালতে যাই।’’
রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার নিয়োগে কারচুপির অভিযোগে তাঁর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বেতনও ফেরাতে হয় আদালতকে। সেই বেতনের পুরো টাকাই পেয়েছিলেন ববিতা। কিন্তু অনামিকার মামলার পর দেখা যায়, ববিতার নিয়োগে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। তাঁর চেয়ে অনামিকা আসলে ২ নম্বর বেশি পেয়েছেন। সেই মামলার রায়ে ববিতার চাকরিও বাতিল করে দিয়েছেন বিচারপতি। তাঁর চাকরি পাচ্ছেন অনামিকা। সেই সঙ্গে পরেশ-কন্যার থেকে তিনি যে টাকা পেয়েছিলেন, তা-ও অনামিকার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ধর্মতলায় নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অনামিকা বলেন, ‘‘আমি আশা রাখছি, সকল যোগ্য এবং বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী এক দিন চাকরি পাবেন। তাঁরাও আমার মতোই স্কুলে যাবেন। আমিও এক দিন ওঁদের মতো ছিলাম।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, আইনজীবী-সহ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অনামিকা। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় না থাকলে এত তাড়াতাড়ি তিনি চাকরি পেতেন না বলেও জানিয়েছেন। মঙ্গলবার আদালতের রায় শুনে ববিতা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। কিছুটা সময় চেয়েছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে অনামিকা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আগে আমি চাকরিতে যোগ দিই, তার পর টাকার বিষয়ে ভাবব। অর্ডার কপি আমার হাতে এলে আরও ভাল করে এ বিষয়ে জানতে পারব।’’