শক্তিপদ বেরা। নিজস্ব চিত্র
লকডাউন কেড়ে নিয়েছে রুটি-রুজি। তার উপর আমপানের তাণ্ডবে ভেঙেছে ঘর। ত্রাণ না পাওয়ায় কার্যত আধপেটা খেয়ে কোনওরকমে দিন কাটছে। এই অবস্থায় রোজকার জীবনযন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের কাছে সপরিবার স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন দৃষ্টিহীন এক ব্যক্তি।
নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের আমদাবাদ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫৭ নম্বর বুথের বাসিন্দা শক্তিপদ বেরা। ১০০ শতাংশ দৃষ্টিহীন শক্তিপদ প্রতিবন্ধী ভাতা পান মাসে ৬০০ টাকা। স্ত্রী অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। দুয়ে মিলে কোনওরকমে স্ত্রী মা ও মেয়েকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু লকডাউনে স্ত্রী কাজে না বেরোনোয় কোনওমতে আধপেটা খেয়ে চলছিল। কোনও ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগ শক্তিপদর। কিন্তু আমপান একেবারে শেষ করে গিয়েছে বলে জানালেন তিনি। ঘূর্ণিঝড়ে এক চিলতে মাটির বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে। না জুটেছে সরকারি সুযোগ-সুবিধা, না ত্রাণ। সরকারি ত্রিপল না পেয়ে মাথা গুঁজতে শেষ পর্যন্ত টাকা ধার করে ত্রিপল কিনতে হয়েছে শক্তিপদকে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ত্রাণ পাইনি। ঘর ভেঙে হেলে গিয়েছে দেওয়াল, যে কোনও মুহূর্তে দেওয়াল চাপা পড়ে সবাই মারা পড়ব। এ ভাবে মরার চেয়ে তাই স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য বিডিওর কাছে আবেদন জানিয়েছি।’’
যদিও বিডিও সুরজিৎ রায় বলেন, ‘‘এরকম কোনও আবেদন এখনও আমার কাছে এসে পোঁছয়নি। তবে ওই ব্যক্তি ও তাঁরর পরিবার কেন ত্রাণ পাননি তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
এ বিষয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘আমপানের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রাজ্যের শাসক দলের অনেকের ক্ষতি না হলেও নাম রয়েছে। অথচ এঁদের সেই তালিকায় জায়গা হল না। আমরা প্রথম থেকেই দাবি করছিলাম শাসকদল আমপানের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে স্বজনপোষণ করছে। এটা তার জ্বলন্ত প্রমাণ।’’
তৃণমূলের নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পাল অবশ্য বলেন, ‘‘ওই পরিবার ত্রাণ না পেয়ে থাকলে বিষয়টি দুঃখজনক। আমি দলগতভাবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’