ছবি ক্যাপশন পরখ: ফুটন্ত জল ও ধোঁয়া খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ছবি: কৌশিক সঁাতরা
মাটি ফেটে বেরোচ্ছে গরম জল, ধোঁয়া।
শুক্রবার সকালে ঘাটাল শহর লাগোয়া মনোহরপুর ২ পঞ্চায়েতের মনসাতলা সংলগ্ন শ্রীপুরের দু’টি জায়গায় এরকমই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। ঘাটাল-রানিচক রাস্তার ধারে একটি বাড়ির কাছেম মাটির নিচে থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছিল। তার কিছুটা দূরের মাঠেও বিক্ষিপ্ত ভাবে গরম জল বেরোতে দেখা গিয়েছে। জল ফুটলে যেমন শব্দ হয়, এ ক্ষেত্রেও সেরকমই শব্দ হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।
বিষয়টি নজরে আসার পরে খবর দেওয়া হয় ঘাটাল থানায়। পুলিশ গিয়ে নির্দিষ্ট জায়গাগুলি দড়ি দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। ঘাটালের বিডিও অরিন্দম দাসগুপ্ত বলেন, “বিশেষজ্ঞদের খবর দেওয়া হয়েছে। ভূ-তত্ত্ববিদদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁরা এলে সঠিক কারণ জানা যাবে।”
লকডাউনে রাস্তায় লোক তুলনায় অনেক কম। তবে এ দিন সকালে বিষয়টি জানাজানি হতেই উৎসাহী অনেকে ভিড় করেন।
ভৌগলিক ভাবে ঘাটাল শহর খুব নিচু। সেখানে মাটি ফুঁড়ে গরম জল এবং ধোঁয়া বেরোনো নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এলাকার প্রবীণরা এ রকম ঘটনা ঘাটালে আগে হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না। দাসপুরের বাসুদেবপুর বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের ভূগোলের শিক্ষক সমরেন্দ্রনাথ মোদকের অনুমান, অনেক সময়ে মাটির নিচের উত্তপ্ত গলিত তরল শিলার অথবা ম্যাগমার পরিচালন স্রোতের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য তার সংস্পর্শে আসা জল ফুটতে শুরু করে। সেই জলই বাষ্প-সহ মাটির দুর্বল অংশ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে।’’
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অমলকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্যাসের চাপ বেড়ে গেলে তা বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে। উত্তপ্ত হিলিয়াম গ্যাসের সংস্পর্শে মাটির নীচের জলও ফুটতে শুরু করে।’’ ভূতত্ত্ববিদদের অনুমান, তাপের ঊর্ধ্বপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে গরম জল বেরোনোও থেমে যেতে পারে। এই ঘটনায় আতঙ্কের কিছু নেই।