প্রতিবাদ: হাসপাতাল চত্বরে রোগীদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
দু’দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। নেই পানীয় জলও। রবিবার থেকে কার্যত নির্জলা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডের এম আর বাঙুর যক্ষ্মা হাসপাতাল। ক্ষুব্ধ রোগীরা তাই সোমবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। দ্রুত জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা চালুর দাবিতে ঘেরাও করা হয় হাসপাতালের সুপারকেও।
বিপত্তি বেধেছিল শনিবার কালবৈশাখীতে। ঝড়-বৃষ্টিতে তার ছিঁড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে চন্দ্রকোনা রোডের বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যক্ষ্মা হাসপাতালেও। ৩১৭ শয্যার এই হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু রাখার বিকল্প কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই শনিবার রাত থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মোমবাতি জ্বালিয়ে কাজ হচ্ছিল। অস্বস্তিকর গরমে ভোগান্তি বেড়েছে চিকিৎসাধীন ১২০ জন রোগীর। বিদ্যুৎ না থাকায় জলের পাম্পও চলেনি। ফলে, শনিবার রাতটুকু কোনওমতে চললেও রবিবার সকাল থেকে হাসপাতালে জলের কোনও জোগান ছিল না। স্নান, জামাকাপড় কাচা থেকে পানীয় জল— সঙ্কট তীব্র আকার নেয়।
ক্ষুব্ধ রোগীরা এ দিন সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। হাসপাতালের রোগী ধরম সিংহ, অতীন মাইতি, সুবল হাঁসদাদের বক্তব্য, শনিবার রাত থেকে হাসপাতালে বিদ্যুৎ নেই। জলের আকাল দেখা দিয়েছে। অথচ সুপারের কোনও হুঁশ নেই। সুপারকে কাছে পেয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন যক্ষ্মা রোগীরা। হাসপাতালের সুপার বিশ্বনাথ দাসের বক্তব্য, আমি বাড়ি গিয়েছিলাম। জল-বিদ্যুতের সমস্যার কথা আমাকে কেউ জানায়নি। যদিও শঙ্করকাটা পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য নমিতা দাসের অভিযোগ, “শনিবার রাতেই ফোন করে সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্তু উনি ফোন কেটে দেন।” হাসপাতালের এক কর্মীও বলেন, “জলসঙ্কটে অনেক রোগী হাসপাতাল ছাড়তে শুরু করেছিলেন। সুপারকে জানিয়েও লাভ হয়নি।” এ কথা অবশ্য মানতে চাননি সুপার বিশ্বনাথবাবু।
গড়বেতা-৩ ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের থেকে জলসঙ্কটের কথা জেনে রবিবার বিকেলে হাসপাতালে জলের গাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করি।” রোগীদের বিক্ষোভের পরে এ দিন দুপুরে হাসপাতালে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। পাম্প চলায় মিটেছে জলসঙ্কটও।