মুনমুন সিংহ। নিজস্ব চিত্র
উচ্চ মাধ্যমিকে ইংরেজি পরীক্ষা ভাল হয়নি। বাড়িতে ফিরে এ কথা জানিয়েওছিলেন তরুণী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার হল তাঁর ঝুলন্ত দেহ।
রবিবার খড়্গপুরের ইন্দার শরৎপল্লিতে মুনমুন সিংহ (১৮) নামে ওই তরুণীর দেহ মেলে বাড়িতেই। গলায় ওড়নার ফাঁসে ঘরের কড়িকাঠ থেকে ঝুলছিল দেহটি। জফলা আদর্শ বিদ্যায়তনের ছাত্রী মুনমুন উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছিলেন। পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল ইন্দা বালিকা বিদ্যালয়ে। শনিবার ইংরেজি পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে ফিরে এসেই মুনমুন জানান, পরীক্ষা ভাল হয়নি। তার পরেই এ দিন সকালে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। খড়্গপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
ওই তরুণী আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই মনে করছে পুলিশ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওই তরুণীর ইংরেজি পরীক্ষা খারাপ হয়েছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। পরীক্ষা খারাপ হওয়াতেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।”
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অভাবী ঘরের ছাত্রী মুনমুনের বাবা দিলীপ সিংহের শহরের কমলাকেবিনে চা দোকান রয়েছে। মা গৌরী সিংহ লোকের বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। দাদা সঞ্জয়ের গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা রয়েছে। এ দিন সকালে সকলেই কাজে বেরিয়েছিলেন। বাড়িতে একা ছিলেন মুনমুন। দাদা সঞ্জয় বাড়িতে ফিরে ডাকাডাকি করলেও মুনমুনের সাড়া পাননি। পরেই ঘরে ঢুকে দেখেন, গলায় ওড়নার ফাঁসে ঝুলছেন বোন।
সঞ্জয় বলেন, “আমার বোন পড়াশোনায় ভাল ছিল। উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার ইচ্ছে ছিল ওঁর। শনিবারের পরীক্ষা ভাল হয়নি বলেছিল। আমরা অনেক বুঝিয়েছিলাম। কিন্তু ও চুপ করে ছিল। তারপর যে এমন কাণ্ড করবে, ভাবতেই পারছি না।” ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।। শোকাহত মুনমুনের স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীরাও। জফলা আদর্শ বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষক সুশান্ত খান বলেন, “মুনমুন পড়াশোনায় ভাল ছিল। ওর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। আমি বুঝতে পারছি না কেন ও এমন কাজ করল!”