স্কুলে পরিদর্শক। নিজস্ব চিত্র।
করোনা কালে নিয়ম ভেঙে স্কুল চালু করার ঘটনায় তদন্ত শুরু করল জেলা শিক্ষা দফতর। একই সঙ্গে হাটসড়বেড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিসও দেওয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক বুধবার দাবি করেছিলেন, পড়ুয়াদের স্বার্থে বিধি ভেঙে ক্লাস করিয়ে তিনি অন্যায় করেননি। যদিও বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি হবে ভাবিনি। ভুল হয়ে গিয়েছে। লিখিত ভাবে শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি।”
এ দিন দাসপুরের হাটসড়বেড়িয়া হাইস্কুলে যান ঘাটালের সহকারী স্কুল পরিদর্শক তুহিনবরণ আদগিরি-সহ অন্য আধিকারিকরা। কথা বলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির সঙ্গে। জেলা স্কুল পরিদর্শক চাপেশ্বর সর্দার বলেন, “ ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট শিক্ষা দফতরে পাঠানো হবে।” তিনি জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শনোর নোটিস পাঠিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে উত্তর দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, পরিস্থিতি ইতিবাচক হলে সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষক দিবসের পর স্কুল খোলার কথা ভাবনাচিন্তা করা হবে। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করেই বুধবার দাসপুরের ওই স্কুল ক্লাস চালু করায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য জুড়ে। তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের পক্ষে সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে স্কুলের ক্লাস চালু করা একটা অপরাধ। পড়ুয়াদের কথা ভেবে শিক্ষা দফতর নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই নিয়ম মানেনি। সরকার যা পদক্ষেপ নেবে, শিক্ষক সংগঠন তা সমর্থন করবে।”
হাটসড়বেড়িয়া স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা ছিল, স্কুল বন্ধ। টিউশনিও বন্ধ। গ্রামীণ এলাকায় স্মার্ট ফোন ব্যবহারের সমস্যা। তাই পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করে, অভিভাবকদের আর্জি মেনে ক্লাস চালু করা হয়েছিল। ফলে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকারের টেলিফোনে টোল ফ্রি নম্বরের মাধ্যমে ক্লাস অথবা বাংলা শিক্ষা পোর্টালের সুফল কি গ্রাম-গঞ্জে পৌঁছচ্ছে না?
শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে পড়ুয়ারা সমস্যায়, এটা ঠিক। তা ছাড়া অনেকের স্মার্টফোন নেই। নেটের সমস্যা। তবে এখন বাংলা শিক্ষা পোর্টালে অ্যাক্টিভিটি টাস্ক আপলোড হচ্ছে। করোনায় ঝুঁকি না নিয়ে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই প্রশ্ন পত্র পড়ুয়াদের হাতে পৌঁছে খোঁজ খবর রাখতে পারতেন। এ ছাড়াও টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করেও পড়ুয়ারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষকদের কাছে পরামর্শ নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ ফোনই যথেষ্ট। প্রয়োজন নেই কোনও স্মার্টফোনের।