অনুরাগ পাত্র। —নিজস্ব চিত্র।
হলদিয়ার বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম শিক্ষায়তনের প্রাক্তন ছাত্র অনুরাগ পাত্র চন্দ্রযান-৩ মিশনের কারিগরদের অন্যতম। আর তাই অভিযানের সাফল্য ছুঁয়ে গিয়েছে তাঁর স্কুলকেও। ইসরোতে কর্মরত এলাকার ছাত্রকে নিয়ে হলদিয়ায় খুশির হাওয়া। বৃহস্পতিবার অনুরাগের স্কুলে কার্যত উৎসবের চেহারা নেয়। শিক্ষকদের সাথে ‘ইসরো’ থেকে কথা বলেন তাঁদের প্রিয় ছাত্র অনুরাগ।
২০১৭ সাল থেকে ইসরোতে বিজ্ঞানী হিসেবে অনুরাগ যোগ দিয়েছেন। তাঁর কাঁধে কী দায়িত্ব ছিল চন্দ্রযান-৩-এর!
ইসরো থেকে ফোনে অনুরাগ বলেন, ‘‘চন্দ্রযান-৩ এ আমি স্পেসস্ক্রাফট অপারেশন ম্যানেজার (এসওএম ) ছিলাম। আমার মুখ্যত কাজ ছিল, স্পেসক্র্যাফট-এর হেলথ চেক করা এবং তার ওপর ভিত্তি করে নির্দেশ দেওয়া (কমান্ডিং)। তিনি জানান, ইসরোর বিজ্ঞানীদের নিরলস সাধনার ফল এই সাফল্য। ২০১৭ থেকে তিনি ইসরোর সদস্য। ইসরো এক স্বপ্নের জগত। অনুরাগের কথায়, ‘‘এই সাফল্য এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে। আমরা দৃঢ় বিশ্বাসী, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই সফল অবতরণ মহাকাশ বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদ সম্পর্কে বিশেষ করে চন্দ্রপৃষ্ঠ সম্পর্কে বহু অজানা বিষয় সামনে আসবে। বিজ্ঞানীদের মতো সারা বিশ্বের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছে।’’
হলদিয়ার প্রিয়ংবদায় বাড়ি অনুরাগের। আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের হরিরহাটে। বাবা বাদল চন্দ্র পাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী। মা কবিতা পাত্র গৃহবধূ। অনুরাগ বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম শিক্ষায়তনে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছেন। মাধ্যমিকে ৯৪ শতাংশ নম্বর নিয়ে স্কুলে সেরা হয়েছিলেন তিনি। পরে হলদিয়া গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড বিবেকান্দ বিদ্যাভবনে উচ্চ মাধ্যমিক। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন হলদিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে। বিষয় ছিল ইলেকট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন। তার পর চলে যান রৌরকেল্লার এনআইটি-তে। সেখানে এম টেক করেন সিগন্যাল অ্যান্ড ইমেজ প্রসেসিং নিয়ে।
প্রিয় ছাত্রকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন স্কুলের শিক্ষক অরূপ কুমার ভট্টাচার্য। অরূপবাবু বলেন, ‘‘স্কুলে এখন উৎসবের পরিবেশ। শিক্ষকেরা ওঁর সাথে কথা বলেছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আগামী নভেম্বর মাসে আমাদের স্কুলে আসার কথা। সেখানে পড়ুয়াদের সামনে চন্দ্রযান নিয়ে সেমিনারের আয়োজন হবে।’’