২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন শেখ সুফিয়ান। —ফাইল চিত্র।
নন্দীগ্রামে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতির হত্যার ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেফ সুফিয়ান, তৃণমূল নেতা আবু তাহের-সহ মোট ৪ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল হলদিয়া মহকুমা আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছে সিবিআই। সোমবার ওই মামলায় সুফিয়ান, তাহের-সহ ৬ তৃণমূল নেতার নামে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা করে সিবিআই।
হলদিয়া আদালতে আইনজীবী স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম থানার কেস নম্বর ২২৪/২০২১ এর ভিত্তিতে সিবিআই আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা করেছে। ওই অতিরিক্ত চার্জশিটে ৬ জনের নাম রয়েছে। এঁরা হলেন শেখ সুফিয়ান, আবু তাহের, শেখ আমানুল্লা, শেখ খুশনবি, শেখ সৈয়ম কাজি এবং শেখ সামসুদ্দোহা। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬ এবং ৩০২ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।” আইনজীবী আরও জানান, সিবিআই আদালতে শেখ সৈয়ম এবং শেখ সামসুদ্দোহার নামে তদন্তে সহযোগিতার কথা বললেও বাকি ৪ জনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। সেই আবেদন মেনে ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। এখন পুলিশ যে কোনও সময় ওই ৪ জনকে গ্রেফতার করতে পারবে।
২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর নন্দীগ্রামের একাধিক এলাকায় বেছে বেছে বিজেপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে তৃণমূলের কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই হামলায় গুরুতর জখম হন বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি। পরে কলকাতায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্তে নেমে ১২ জন তৃণমূল নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুফিয়ানের জামাইও।
এর পর আবু তাহেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তিনি বার বার তা এড়িয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এর পর তাহেরকে ধরতে একাধিক বার তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায় সিবিআই। তবে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট থেকে রক্ষাকবচ পান সুফিয়ান। আদালতের নির্দেশ ছিল মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুফিয়ানকে গ্রেফতার করা যাবে না। সোমবার সিবিআই অতিরিক্ত চার্জশিটে সুফিয়ান-সহ ৬ জনের নাম যুক্ত করেছে। এখন মমতার নির্বাচনী এজেন্ট গ্রেফতার হতে পারেন বলে মনে করছে আইনজীবীদের একাংশ।