বড় গাড়ি হাঁকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করতেন সুব্রত। —নিজস্ব চিত্র।
১৮ লাখ টাকার গাড়ি হাঁকিয়ে মাসে প্রায় ১৮ লাখ টাকা প্রতারণা করতেন। এই অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করল হুগলির দাদপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্তের কাছ থেকে ১৯০টি ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড পেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়াও তিনটি আইফোন, সোয়াইপ মেশিন, ভুয়ো প্রেস কার্ড পেয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম সুব্রত গিরি। গাড়িতে ‘প্রেস’ লিখে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এটিএম জালিয়াতি করে বেড়াতেন তিনি।
সোমবার দাদপুর থানায় সাংবাদিক বৈঠকে করেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি নিমাই চৌধুরী, সিআই ধনিয়াখালি দেবাঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ওসি প্রশান্ত ঘোষ। ডিএসপি বলেন, ‘‘গত ২৭ ডিসেম্বর হারিট বাজারে ব্যাঙ্কের সামনে ডিউটি করছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। বাজারে ২টি এটিএম কিয়স্ক রয়েছে। সেখানে একটি কালো রঙের গাড়ি দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। গাড়ির চালক মাঝেমধ্যে এটিএমে ঢুকছেন। আবার বেরিয়ে এসে গাড়িতে বসছেন। তাঁর আচরণে সন্দেহ হয় ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের। তিনি দাদপুর থানায় খবর দেন। ওসি সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। কিন্তু পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। তাঁর গাড়ি ধাওয়া করে তাঁকে ধাওয়া করে পুলিশ।’’
অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, আদতে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বাসিন্দা। তবে বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনার নিমতায় থাকেন। ভূগোলে স্নাতক সুব্রত প্রোমোটিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তবে বছর দুই ধরে এ ভাবে প্রতারণার কারবার শুরু করেছেন। পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় এটিএমে টাকা তুলতে সাহায্য করার নাম করে অন্যের এটিএম কার্ডের পিন নম্বর জেনে নিয়ে টাকা তুলে নিতেন তিনি। এ ভাবে মাসে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছেন সুব্রত।
পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির সামনে ‘প্রেস’ লেখা থাকলেও কোনও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সুব্রত যুক্ত নন। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে গাড়িতে প্রেসের স্টিকারের সঙ্গে ‘কার পাস’ স্টিকারও ব্যবহার করেছিলেন তিনি। সুব্রতকে গ্রেফতারের পর এটিএম কার্ড, আই ফোন বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে নগদ ২৭ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। অভিযুক্তকে ৭ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।