সংক্রামক বিভাগের অবস্থা এমনই। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।
বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। মাঝে মধ্যে চাঙরও খসে পড়ে মেঝেতে। সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল দশা ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের সংক্রামক বিভাগটির। অথচ, ১২ শয্যার এই বিভাগটির উপর নির্ভরশীল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লকের কয়েক লক্ষ বাসিন্দা। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের সুপার কুনাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “পরিষেবার দিক দিয়ে কোনও ঘাটতি নেই। তবে হাসপাতাল সংস্কার শুরু হবে দ্রুত। বিষয়টি পূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে।”
কয়েকদিন আগেই ঘটা করে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের উদ্বোধন হল। প্রায় ৬২ কোটি টাকা খরচ করে ঝাঁ চকচকে ভবনও তৈরি হয়েছে। চিকিৎসা পরিষেবার ন্যূনতম কোনও পরিকাঠামো তৈরি না করে নতুন হাসপাতালের উদ্বোধন নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। অথচ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ঠিক পেছনেই রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ওই বিভাগটি। অথচ সেই বিষয়ে উদ্বিগ্ন নন স্বাস্থ্য কর্তারা। নতুন হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রাস্তা তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। কিন্তু হাসপাতালের সংক্রামক বিভাগে যাওযার জন্য কোনও রাস্তাই নেই। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, বৃষ্টিতে রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসক থেকে কর্মী-কেউই ওই বিভাগে যেতে পারেননি। রোগীরাও পড়েছিলেন ফাঁপড়ে। অবস্থা বেগতিক বুঝে ওই বিভাগ থেকে রোগীদের সরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ডায়েরিয়া, টিবি, চিকেন পক্স প্রভৃতি সংক্রামক রোগীদের জন্যেই সংরক্ষিত ওই বিভাগটি। হাসপাতালের তথ্যই বলছে, বছরে দু’হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয় বিভাগটিতে। খাদ্যে বিষক্রিয়া বা অন্য কোনও অঘটন ঘটলে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়ে। অথচ, বিভাগটিতে মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা কোনও বিভাগ নেই। একই ঘরে মহিলা ও পুরুষ রোগীরা থাকে। এমনকী বিভাগটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না বলেও অভিযোগ। সমস্যার কথা স্বাকীর করছেন চিকিৎসকরাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সংক্রামক বিভাগ সব সময়ই পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। হাসপাতালের সামনে নোংরা-আবর্জনা ভর্তি। আমাদেরই ঢুকতে বিরক্ত লাগে! রোগীরা কী ভাবে থাকেন-বুঝতেই পাচ্ছেন।” সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য স্থায়ী কমিটির সদস্য পঞ্চানন মণ্ডল বলেন, ‘‘দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু হবে। রোগীর আত্মীয়দের থাকার ব্যবস্থাও হবে। দিন কয়েকের মধ্যেই রাস্তার কাজ হবে।”