দুর্ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র
খালের জলে ডুবল কলার ভেলা। এক মহিলা-সহ দু’জনকে জলে ঝাঁপিয়ে বাঁচালেন এক প্রৌঢ়। রবিবার দুর্ঘটনাটি ঘটে গড়বেতা ১ ব্লকের সন্ধিপুর অঞ্চলের রাজবল্লভপুর গ্রামের কাছে কেঠিয়া খালের ঘাটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলাবতী নদীর একটি শাখা কেঠিয়া খাল নামে সন্ধিপুরের একাংশের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। এই খালের দক্ষিণ দিকে থাকা গড়বেড়িয়া, রাজবল্লভপুর, কিশোরপুর, বৃকভানুপুর-সহ কয়েকটি গ্রামের চাষিদের জমি রয়েছে খালের উত্তর দিকে। ওই খালে থাকা সাঁকো অনেকদিন আগেই ভেসে গিয়েছে। লকডাউনের জন্য নৌকাও মেরামত করা নেই। তাই গত কয়েকদিন ধরেই চাষিরা জমি থেকে কৃষিপণ্য তুলে বড় কড়াই, হাঁড়ি বা কলার ভেলা করে খাল পার হচ্ছিলেন। রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ সেভাবে পারাপারের সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গড়বেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব চাষি কাশীনাথ পাল কলাগাছের ভেলায় তেলের খালি তিনটি ট্যাঙ্ক দড়ি দিয়ে বেঁধে খাল পার হচ্ছিলেন। তাতে তিনি ছাড়াও তাঁর সপ্তম শ্রেণিতে পড়া নাতি সন্দীপ ও আলপনা মান্না তাঁর গ্রামেরই এক মহিলা ছিলেন। ছিল কয়েক বস্তা ধান। জলের প্রবল স্রোতে মাঝখালেই ডুবে যায় ভেলাটি। তিনজনই ভেসে যেতে থাকেন। সন্দীপ ডুবন্ত ভেলার দড়ি ধরে সাঁতরে পাড়ে উঠলেও কাশীনাথ ও আলপনা ডুবেই যাচ্ছিলেন। তখনই খালপাড়ে থাকা লক্ষ্মীকান্ত সামন্ত নামে এক প্রৌঢ় চাষি খালে ঝাঁপিয়ে তাঁদের দিকে গামছা ছুঁড়ে দেন। সাহায্য এগিয়ে আসেন প্রহ্লাদ দুলে, সুকুমার দাস-সহ আরও কয়েকজন। ওই গামছার সাহায্যেই কাশীনাথ ও আলপনাকে পাড়ে তোলা হয়। লক্ষ্মীকান্ত বলেন, ‘‘জলে দু’জন হাবুডুবু খাচ্ছেন দেখে কিছু না ভেবেই খালে ঝাঁপ দিই।’’
নাতি-সহ তিনজনেরই প্রাণ বাঁচায় স্বস্তিতে কাশীনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘খালপাড়ে থাকা লোকজনই আমাদের নতুন প্রাণ দিয়েছেন।’’ দুর্ঘটনার পরে ওই খালে স্থায়ী সেতু, নিদেনপক্ষে সাঁকোর দাবি উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক মঙ্গলপ্রসাদ মাইতি বলেন, ‘‘কেঠিয়া খালে সাঁকো বা সেতু খুবই প্রয়োজন। নইলে চাষিদের কৃষিপণ্য নিয়ে কৃষকদের পারাপারে অসুবিধা হয়। গড়বেতা ১ বিডিও সেখ ওয়াসিম রেজার আশ্বাস, খালের ওই অংশ পরিদর্শন করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।