ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
বন্যপ্রাণী ও মানুষের সংঘাত ঠেকাতে ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি করছে বন দফতর। শুক্রবার ঝাড়গ্রামে বনবান্ধব উৎসবের উদ্বোধন করে এমনটাই জানালেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন স্কুল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও বন সুরক্ষা কমিটির সাহায্য নেওয়া হবে।
এ দিন ঝাড়গ্রাম ব্লকের পুকুরিয়ার রাজপাড়া ফুটবল মাঠে ওই উৎসবে বনমন্ত্রী বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণীর হাতে মানুষ আহত বা নিহত হচ্ছেন। আবার মানুষও বন্যপ্রাণীকে উত্ত্যক্ত করছেন। সেই সংঘাত ঠেকাতে আমরা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করছি।’’
হাতির তাণ্ডবে জঙ্গলমহলে রোজই ক্ষয়ক্ষতি, মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বনমন্ত্রী বলেন, ‘‘অন্য রাজ্য থেকে প্রচুর হাতি আসছে। তাদের অন্য রাজ্যে ফেরত পাঠাতে হবে। অনেক রকম সমস্যা আছে। আপনাদের কাছে সাহায্য চাইছি। স্কুল, বনসুরক্ষা কমিটি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে দিয়ে সচেতনতার কাজ হবে। মানুষকে ভাল করে বোঝাতে হবে কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়।’’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বনমন্ত্রী জানান, হাতি তাড়ানোর হুলাপার্টির মজুরি বানানোর ভাবনা চিন্তা হচ্ছে। রাজীব বলেন, ‘‘আমাদের হাতে কোনও ম্যাজিক নেই। অনেক দেনা মাথায় চলছে। আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। কর্মী স্বল্পতা রয়েছে। কিন্তু আমরা তা সত্ত্বেও যে প্রকল্পগুলি জরুরি সেগুলি বিবেচনায় রাখব।’’
বনাঞ্চল রক্ষা করতে না পারলে, সবুজের পরিধি বাড়াতে না পারলে পরিস্থিতি কী ভয়ানক হতে অ্যামাজন, অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ টেনে মনে করিয়ে দেন রাজীব। তাঁর আহ্বান, ‘‘আমাদের প্রধান এবং প্রথম কর্তব্য সবুজকে বাঁচিয়ে রাখা। সবাইকে গাছ লাগাতে হবে।’’ সবুজায়নে জোর দিতে আরও বড় উৎসব হবে বলেও জানান বনমন্ত্রী। ঝাড়গ্রামে বনাঞ্চল বেড়েছে দাবি করে বনমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘এর কৃতিত্ব বনকর্মীদের পাশাপাশি, এলাকাবাসীর।’’
এ দিন মঞ্চ থেকে বনসুরক্ষা কমিটি গুলির সদস্যদের হাতে বনজ সম্পদ বিক্রির লভ্যাংশের চেক, পাওয়ার টিলার, ধান ঝাড়াই যন্ত্র, সেচ পাম্প, সবুজশ্রীর চারা-সহ নানা পরিষেবা তুলে দেন বনমন্ত্রী। পর্যটকদের জন্য বেলপাহাড়ি জঙ্গল-ক্যাম্প প্রকল্পের সূচনাও করেন। পরে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় যান মন্ত্রী। নতুন পাখিরালয়, নেকড়ের এনক্লোজার ও সরীসৃপ ভবনের উদ্বোধন করেন। দু’টি হায়না শাবকের হেমন্ত ও হৈমন্তী নামকরণও করেন বনমন্ত্রী। চিড়িখানায় টয় ট্রেন চালু, বয়স্কদের জন্য ব্যাটারি চালিত বিশেষ যানেরও আশ্বাস দেন।