নয়াচরে শনিবার জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র
হলদি নদীর চরে গজিয়ে ওঠা নয়াচর দ্বীপে কয়েক বছর আগেই জনবসতি গড়ে উঠেছিল। এঁদের প্রায় সকলেই মৎস্যজীবী। হলদিয়া শহর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য এবার বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যে নয়াচরে বিভিন্ন বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারেরা যাবেন। সেখানে কী কী পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায় সে ব্যাপারে সরেজমিনে খতিয়ে দেখে তার রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বেশ কিছু পরিকল্পনার একটি প্রস্তাব জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে।গত শনিবার জেলা সভাধিপতি দেবব্রত দাস এবং জেলাশাসক পার্থ ঘোষের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল নয়াচরে গিয়েছিল। মূলত আমপান পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে তথ্য জানতেই ছিল ওই সফর। সেখানকার বাসিন্দারা তাঁদের দীর্ঘদিনের নানা সমস্যা প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, হলদিয়া উন্নয়ন ব্লকের দেউলপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে নয়াচর। বাসিন্দারা মূলত পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার। দ্বীপে বসবাসকারী বহু ছেলে-মেয়ে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তা ছাড়া শৌচাগারের অভাবে দ্বীপ এলাকার বাসিন্দাদের প্রকাশ্যেই খোলা মাঠে শৌচকর্ম করতে হয়। পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি অচল। এমনকী প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা টুকুও মেলে না। ফলে দ্বীপ এলাকার বাসিন্দাদের দুর্দশার শেষ নেই। আপাতত সেখানে একটি আইসিডিএস কেন্দ্র, পানীয় জলের নলকূপ, শৌচাগার, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার দাবি উঠেছে। শীঘ্রই ওই এলাকায় বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার গিয়ে কোন জায়গায় কী ধরনের সে বিষয়ে রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে দেবে। উল্লেখ্য, নয়াচরে ঘুরে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা এলাকায় পরিবেশবান্ধব পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এখনও সে সবের প্রাথমিক পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। এই সব পরিকাঠামো তৈরিতে যথেষ্ট অর্থ প্রয়োজন। তাই রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল আখতার বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এখানকার বাসিন্দারা নানা সমস্যায় জর্জরিত। সেই সব সমস্যা মেটাতে যাতে প্রাথমিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায় তার জন্য প্রশাসনিক প্রতিনিধিদের কাছে আবেদন জানিয়েছি।’’ জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী বলেন, ‘‘নয়াচরে কোথায় কী পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায় সে ব্যাপারে বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেই সমীক্ষা শেষ করে রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেব।’’