কোলাঘাটের পানশিলা ফুলবাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র
প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এলাকার ফুলচাষিদের জন্য একটি ফুলবাজার গড়ে দেওয়ার ব্যাপারে। ফুলবাজার তৈরিও হয়েছে। কিন্তু তা আজও চালু হয়নি। বরং ফুল বাজার চত্বরে গড়ে উঠেছে শাসক দলের দলীয় কার্যালয়।ফুলবাজার জুড়ে মজুত করা নির্মাণ সামগ্রী। তৈরি হয়েও হতশ্রী কোলাঘাটের পানশিলা ফুলবাজার। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ক্ষোভ ফুলচাষিদের।
কোলাঘাটের দেউলিয়ায় প্রতিদিন ভোর থেকে বসে রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম ফুলবাজার। দুই মেদিনীপুর ও হাওড়ার প্রায় তিন হাজার ফুলচাষি প্রতিদিন ফুল নিয়ে আসেন এখানে। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের কিছুটা অংশ জুড়ে ওই বাজার বসার ফলে মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। তাই ফুলবাজারটি অন্যত্র সরানোর জন্য বহুদিন থেকেই সরব ছিলেন ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ীরা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে দেউলিয়া ফুলবাজার কিছুটা দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয় অদূরে পানশিলা এলাকায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে তিন একর নয়ানজুলি ভরাট করে গড়ে তোলা হবে নতুন ফুলবাজার। এর জন্য খরচ ধার্য হয় প্রায় ৪ কোটি টাকা। দু'বছর আগে ছাউনি ও দালান সহ ফুলবাজারের সিংহভাগ পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হয়।তা সত্ত্বেও ফুলবাজারটি চালু হচ্ছে না বলে অভিযোগ। নতুন ফুলবাজার চত্বরে মজুত করা রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। ফুলবাজার চত্বরে গড়ে উঠেছে শাসক দল তৃণমূলের কার্যালয়।
অন্যদিকে কোলাঘাট ফুলবাজার রেলের খুব স্বল্প পরিসর জায়গায় বসে। বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী কোলাঘাট ফুলবাজারে আসেন। পানশিলা ফুলবাজার চালু হলে চাপ কমবে কোলাঘাট ফুলবাজারের ওপর। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবব্রত পট্টনায়েক বলেন, "শাসক দল তৃণমূল আসলে কৃষক বিরোধী। সেজন্য ফুলচাষিদের জন্য তৈরি ফুলবাজার চালু না করে সে জায়গায় পার্টি অফিস বানিয়েছে। ওখানে ইমারতি সামগ্রী মজুত করে তৃণমূলের নেতারা ব্যবসা করছে। ফুলচাষিরা ভোটবাক্সে এর জবাবদে দেবেন।"
মেদিনীপুর জেলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, "তিন বছর ধরে ফুলবাজারটি চালু না হয়ে পড়ে রয়েছে। ফুলচাষিরা এ নিয়ে ক্ষুব্ধ। পঞ্চায়েত স্তরে চাষিরা যদি এভাবে সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন তাহলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।"
অভিযোগ স্বীকার করে তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক সভাপতি অসীম মাজি বলেন,"সরকারি কাজের জন্য নির্মাণ সামগ্রী ওখানে রাখা হয়েছে। ফুলবাজার তৈরির আগে থেকেই ওই জায়গায় আমাদের একটি পার্টি অফিস রয়েছে।প্রশাসনিক কিছু সমস্যার জন্য ফুলবাজারটি চালু করা যাচ্ছে না। আমরা কথা দিচ্ছি, ফুলবাজার চালু হয়ে গেলে পার্টি অফিস সরিয়ে নেব।"