মরসুমের প্রথম ইলিশ দিঘায়। নিজস্ব চিত্র
পুবালি হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টির হাত ধরেই মরসুমের প্রথম ইলিশের দেখা মিলল দিঘায়। শুক্রবার দিঘার বাজারে ৩০ টনেরও বেশি ইলিশ আমদানি হয়েছে। ফলে আগামী কয়েক দিনে ইলিশের দাম বেশ কিছুটা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ১৫ জুন সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার উপরে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের জারি করা 'ব্যান পিরিয়ডের' মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ বছর মাছ ধরার মরসুম শুরু হওয়ার পরে এক মাস ঘুরতে না ঘুরতেই মৎস্যজীবীদের জালে রাশি রাশি রূপোলি শস্য। হাসি ফুটছে ট্রলার মালিক থেকে শুরু করে মৎস্যজীবীদের মুখে। ‘দিঘা ফিসারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর অবশ্য মরসুম শুরু হওয়ার পর একদিনে ১০টন ইলিশ মাছ আমদানি হয়েছিল দিঘায়। এ দিন দিঘা মোহনায় বহু ট্রলার ফিরে এসেছে। সেই সব মৎস্যজীবীদের জালে প্রায় ৩০ টনেরও বেশি ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে। সকালে দিঘা মোহনা মাছ নিলাম কেন্দ্রে ২৫-৩০ টন ইলিশ মাছ বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আরও ১০ থেকে ১৫ টন ইলিশ মাছ নিয়ে বেলা বাড়ার পর বেশ কয়েকটি ট্রলার এসে পৌঁছয়।
এ দিনের আমদানি করা মাছগুলি আকারেও যেমন ঠিক ছিল, তেমনই দামও ছিল নাগালের ভিতরে। ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। আর ৮০০ গ্রাম থেকে এক কিলোগ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হয় ১,১০০ থেকে ১,২০০ টাকায়। ট্রলার মালিকেরা জানাচ্ছেন, এদিন যে পরিমাণ ইলিশ মাছ মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়েছে, তার ১০ শতাংশ এক কিলোগ্রাম বা তার বেশি ওজনের। তবে ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের জোগান একেবারে স্বাভাবিক।
গত কয়েকদিন ধরে সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি এবং পূবালী হাওয়া রয়েছে। আগামী কয়েক দিন এমন আবহাওয়া থাকলে ইলিশের খরা কাটবে বলেও আশা করছেন মৎস্যজীবীরা। পাশাপাশি, ইলিশের দামও নাগালের মধ্যে চলে আসতে পারে। পঞ্চায়েত ভোটের কারণে কয়েকদিন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। ভোট দিয়ে বাড়ি থেকে ফিরে পুনরায় মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছেন। দিঘা ফিসারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স আসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, "শুক্রবার প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ টন ইলিশ উঠেছে দিঘা মোহনায়। এবছর প্রকৃতি কিছুটা সহায়ক। আশা করি আগামী কয়েক দিনে ইলিশের আমদানি আরও বাড়বে। তখন দামও কমে যাবে। আমরা চাই সব বাঙালির পাতে ইলিশ পড়ুক।’’