এ বার কোলাঘাট থানায় এফআইআর শুভেন্দুর। —ফাইল চিত্র।
এ বার হোয়াটসঅ্যাপ-বিতর্কে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করল তৃণমূল। অভিযোগ, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ‘কুমন্তব্য’ লিখেছেন তিনি। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানায় নন্দীগ্রামের বিধায়কের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে।
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি প্রসেনজিৎ দে। তাঁর দাবি, গত ১৪ই নভেম্বর শুভেন্দুকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ‘শুভেচ্ছাবার্তা’ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধী দলনেতা তার প্রত্যুত্তরে মমতা এবং অভিষেকের উদ্দেশে ‘কুরুচিকর আক্রমণ’ করে মেসেজ করেছেন। ঠিক কী লিখেছেন শুভেন্দু, তা পরিষ্কার করেননি ওই নেতা। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বিরোধী দলনেতার ওই মেসেজ ‘অসম্মানজনক’ এবং ‘সংবিধান বিরোধী’ বলে অভিযোগপত্রে লিখেছেন তিনি।
এর আগে তমলুক সাইবার থানায় প্রায় ১,১০০ ফোন নম্বরের তালিকা দিয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন তাঁকে বিব্রত করতে ফোন ও মেসেজ করা হচ্ছে। এবং এ জন্য মমতা এবং অভিষেককে একহাত নেন তিনি।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর শুভেন্দুর মূল নিশানায় মূলত অভিষেক। বস্তুত, মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপির পতাকা তুলে নিয়ে শুভেন্দুর প্রথম মন্তব্যই ছিল অভিষেকের উদ্দেশে। এর পর উভয় তরফে একাধিক বার আক্রমণ হয়েছে। কখনও তা গড়িয়েছে আদালতের দরজা পর্যন্ত। তবে এ বার সেই ‘রাজনৈতিক আক্রমণ’ ঢুকে পড়েছে দুই বাড়ির অন্দরে। অভিষেকের সন্তানকে নিয়ে শুভেন্দুর সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টকে ঘিরে চলতি বিতর্কের সূত্রপাত।
গত রবিবার অভিষেকের ছেলের জন্মদিনে কলকাতার নামী হোটেলে পার্টি হচ্ছে বলে উল্লেখ করে কটাক্ষপূর্ণ টুইট করেন শুভেন্দু। কিন্তু তাঁর এই টুইট ভুয়ো দাবি করে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মন্তব্য করেন, ‘মানসিক সমস্যা’ থেকে শুভেন্দু এমন পোস্ট করেছেন। তাই তাঁকে ‘গেট ওয়েল সুন’ (দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন) বার্তা দেওয়া কার্ড এবং ফুল দিয়ে ‘শান্তিকুঞ্জ (শুভেন্দু ও শিশিরের বাড়ির নাম) অভিযান’ চালানো হবে।
এর পরই তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাঁথিতে এসে জড়ো হন। কেউ আবার ডাক পোস্টে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে ‘শুভেচ্ছাবার্তা’ পাঠাতে শুরু করেন। এর পর হাই কোর্টের হস্তক্ষেপে শুভেন্দুর বাড়িতে তৃণমূলী অভিযানে ছেদ পড়ে। কিন্তু তাতেও আটকানো যাচ্ছে না এই ‘শুভেচ্ছার’ ঢল। শুভেন্দুর অভিযোগ, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে হাজার হাজার মেসেজ আসছে। উদ্দেশ্য তাঁকে বিরক্ত করা।