ছবি: সংগৃহীত
সরস্বতী পুজো উপলক্ষে টানা তিনদিন ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার ও বৃহস্পতিবার সরস্বতী পুজো। শুক্র, শনি ও রবিবার মিলিয়ে ছুটি টানা পাঁচদিনের। শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত শস্য বিমায় আবেদনের শেষ দিন ছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার সরস্বতী পুজো উপলক্ষে টানা ছুটি ঘোষণা করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। যাঁরা আবেদন করবেন ভেবেছিলে, টানা ছুটিতে মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। যদিও ছুটিতে পঞ্চায়েত ও ব্লক অফিস বন্ধ থাকলেও বিমা কোম্পানির এজেন্টরা ছুটির দিনেও কাজ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থা।
ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ২০১৯-’২০ বর্ষের রবি ও বোরোচাষের জন্য শস্য বিমায় আবেদন জমা নেওয়ার কাজ। রবিশস্যের জন্য আবেদন জমা শেষ হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর। বোরো ধানের ক্ষেত্রে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে বলে ঘোষণা করেছিল কৃষি দফতর। সেই মতো কৃষি দফতর প্রচারও শুরু করে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক কৃষি অফিসগুলিতে বিমার আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছিল। শেষ দিন এগিয়ে আসায় এর জন্য ভিড়ও বাড়তে থাকে। কিন্তু সরস্বতী পুজো উপলক্ষে সরকার টানা ছুটি ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েন কৃষকদের একাংশ। কোলাঘাটের পরমানন্দপুর গ্রামের কৃষক ব্যোমকেশ ঘাঁটা বলেন, ‘‘বোরো চাষের কাজ শুরু হয়ে যাওয়ায় শস্য বিমায় আবেদন করা যায়নি। ভেবেছিলাম আজ-কালের মধ্যে আবেদন করব। কিন্তু সরস্বতী পুজো উপলক্ষে টানা ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ছুটির মধ্যে শেষ দিন ঢুকে যাওয়ায় আর আবেদন করতে পারব কিনা জানি না।’’
চাষিদের এমন সমস্যায় ছুটির দিনেও যাতে তাঁরা শস্য বিমার জন্য আবেদন করতে পারেন, সে বিষয়ে মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর আশিস বেরাকে হোয়াটসঅ্যাপে আবেদন জানিয়েছেন কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার হঠাৎ ছুটি ঘোষণার ফলে এখনও যে সমস্ত কৃষক শস্য বিমায় আবেদন করেননি তাঁরা অসুবিধায় পড়েছেন। কৃষি দফতরের উচিত কৃষকদের কথা ভেবে ছুটির দিনও আবেদন জমার কাজ জারি রাখা।’’ আশিসবাবু বলেন, ‘‘সরকারি দফতর ছুটি থাকলেও বিমা কোম্পানির ছুটি নেই। তারা চাইলে ছুটির দিনেও কাজ করতে পারে।’’ এই ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থার আধিকারিক স্বরূপ দাস বলেন, ‘‘ছুটির দিনগুলিতে যাতে কৃষকদের শস্যবিমায় আবেদন করতে অসুবিধা না হয় তার জন্য আমরা বিশেষ দল তৈরি করে গ্রামে গ্রামে পাঠিয়ে আবেদন সংগ্রহের কাজ করব।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘গত বছর রবি মরসুমে পূর্ব মেদিনীপুরে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার অঋণী কৃষক শস্য বিমায় আবেদন জানিয়েছিলেন। এ বার সংখ্যাটা তিন লক্ষ ছাড়িয়েছে। সমস্ত ফসল মিলিয়ে এ বার আবেদনকারীর সংখ্যা পাঁচ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন।