বিবেকানন্দের মৃত্যুতে শোকের ছায়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
বাসের তলায় চাপা পড়া শরীর। সেখান থেকে বার হয়ে থাকা একটা হাত। ভাঙা বাইকের সামনে লেখা ‘আদি’। প্রাথমিক ভাবে এই সব খণ্ডদৃশ্যই পুলিশকর্মী বিবেকানন্দ ডাবের মৃত্যুর খবরটা পৌঁছে দিয়েছিল ঝাড়গ্রামের জামবনিতে। তাঁর নিজের গ্রামে।
জামবনির চিচিড়ার বাসিন্দা বিবেকানন্দ। বৃহস্পতিবার তরতাজা ওই যুবক প্রাণ হারিয়েছেন রেড রোডের বাস দুর্ঘটনায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের রেলিং ভেঙে ফোর্ট উইলিয়ামের পাঁচিলে ধাক্কা মারে বাসটি। বাসের নীচে চাপা পড়ে যান বাইক আরোহী ওই পুলিশকর্মী।
বেলা তখন সাড়ে ১২টা। টিভিতে দেখানো হচ্ছে দুর্ঘটনার খবর। তা থেকেই প্রথম খুড়তুতো ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পান পবিত্র ডাব। পবিত্র বলছেন, ‘‘আমরা টিভির খবর দেখেই ওর মৃত্যুর খবরটা পাই। দুর্ঘটনাস্থলে একটা হাত বার হয়েছিল। ওর সাত বছরের ছেলের নাম ‘আদি’। বাইকে সেটা লেখা ছিল। দেখাও যাচ্ছিল। তখনই বুকটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে। এর পর ওর গাড়ির নম্বরটা দেখতে পাই। তখন আমি বুঝতে পারি কী ঘটে গিয়েছে!’’
বাড়িতে বিবেকানন্দের বাবা আশিস, মা মিনতি, স্ত্রী এবং একমাত্র পুত্র ছেলে আদি রয়েছেন। আচমকা একটা সজোরে ধাক্কায় যেন স্থাণুবৎ গোটা পরিবার। পবিত্র বলছেন, ‘‘কী যে হয়ে গেল! কাকা, কাকিমা ভেঙে পড়েছেন। কথা বলতে পারছেন না। ওঁদের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।’’
বিবেকানন্দের মৃত্যুতে শোকে পাথর গোটা গ্রাম। তাঁর বাল্যবন্ধু সুদীপ রানা বললেন, ‘‘ও আমার ছোটবেলার বন্ধু। চাকরির সূত্রে বাইরে চলে গিয়েছিল ঠিকই, তবে বাড়িতে এলে আমাদের সঙ্গেই ওর ওঠাবসা ছিল। গ্রামের সকলের সঙ্গে ওর মিষ্টি ব্যবহার খালি মনে পড়ে যাচ্ছি। এমনটা যে হতে পারে আমাদের ধারণাই ছিল না।’’