টাকা দিলেই দু’দিনের মধ্যে মিলবে সরকারি আবাসন প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ। পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের নামে ফোন করে উপভোক্তাকে এমনই জানানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এতেই শোরগোল পড়েছে এলাকায়। নাম ভাড়িয়ে ভুয়ো ফোন করার ঘটনায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতাপপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কানাসি কিশোরচক গ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয়া বিবি রাজ্য সরকারের ‘গীতাঞ্জলি’ আবাসন প্রকল্পে বাড়ি তৈরির আবেদন করেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল সুপ্রিয়ার দেওর শেখ আনুয়ারের মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনে শেখ সামসুর আলম নামে এক ব্যক্তি নিজেকে পঞ্চায়েতের কর্মী পরিচয় দেয়। সে ছ’হাজার টাকার বিনিময়ে দু’দিনের মধ্যে সুপ্রিয়াকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় বলে অভিযোগ।
এখানেই শেষ নয়, সুপ্রিয়া জানাচ্ছেন, ওই দিন কিছুক্ষণ পর অন্য একটি নম্বর থেকে ফের ফোন আসে। তাতে নিজেকে প্রতাপপুর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান পরিচয় দিয়ে জানানো হয়, পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে টাকা জমা দিতে। সন্দেহ হওয়ায় আনুয়ার স্থানীয় তৃণমূল কর্মী শেখ মুস্তাফা আলিকে বিষয়টি জানান। মুস্তাফা পঞ্চায়েত প্রধান শঙ্করপ্রসাদ সামন্তকে বিষয়টি বলেন।
এর পরে প্রধানের সামনে থেকে মুস্তাফা ওই দুটি মোবাইল নম্বরে ফোন করেন। জানতে চান, টাকা কোথায় দিতে হবে? দাবি, ওই ব্যক্তি তখন জানান, স্থানীয় ব্যাঙ্কের সামনে আসতে। সেই মতো মুস্তাফা ব্যাঙ্কের সামনে গেলে ওই ব্যক্তি ফোন করে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে তাতে টাকা জমা দিতে বলে। মুস্তাফা জানান, বৃহস্পতিবার ওই ব্যক্তি আর ফোন করেনি এবং ধরেওনি।
মুস্তাফা জানাচ্ছেন, শুক্রবার ফের ওই ব্যক্তি ফোন করে জানান, অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। তাঁকে পাঁশকুড়া ব্লক অফিসের সামনে আসতে বলেন। এ দিকে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তথ্য যাচাই করে পঞ্চায়েত প্রধান শঙ্কর জানতে পারেন, শেখ সামসুর আলম নামে ওই ব্যক্তির বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। এর পরেই শনিবার শেখ মুস্তাফা আলি এদিন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মুস্তাফা বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি যে প্রতারক। ওই নামে কোনও পঞ্চায়েত কর্মী নেই। তাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
উল্লেখ্য মাস কয়েক আগে ওই একই কায়দায় প্রতাপপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দু’জনের কাছ থেকে আবাসন প্রকল্পের টাকা দেওয়ার নামে সাড়ে চার হাজার করে টাকা নিয়ে যায় অপরিচিত এক যুবক। সে সময় প্রতারিত হন কানাসি কিশোরচক গ্রামের বাসিন্দা চন্দনা পোড়্যা এবং রায়বাঁধ গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ বেরা।
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় প্রতাপপুর পঞ্চায়েতের প্রধান শঙ্কর বলেন, ‘‘এই এলাকায় একটি প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসীকে অনুরোধ করব, এই ধরনের কোনও ফোন পেলে পঞ্চায়েতে বা থানায় জানান।’’