হাতির দেখা মিলল কনাবতীতে। ইনসেটে, লোধাসাঁই গ্রামে হাতির হানায় ভাঙচুর হওয়া বাড়ি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
এ বার হাতির হানা একেবারে জেলার সদর শহরের পাশে!
মেদিনীপুরের পশ্চিম দিকে রয়েছে সদর ব্লকের কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েত। শহর থেকে দূরত্ব বড়জোর দু’কিলোমিটার। শনিবার সকালে এই এলাকাতেই তাণ্ডব চালায় পাঁচটি হাতির দল। সকলেই রেসিডেন্সিয়াল। লোধাসাঁই, বড়ডাঙ্গা প্রভৃতি এলাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে তারা। সকালে আচমকাই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতিগুলি। চারটি বাড়ি ভাঙচুর করে দলটি। পরে অবশ্য এলাকাবাসীর তাড়া খেয়ে হাতিগুলি ফের জঙ্গলে ফিরে যায়। হাতির দলটি চাঁদরার জঙ্গলে ছিল। সেখান থেকেই এ দিক-সে দিক ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। বন দফতরের মেদিনীপুর বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “কনকাবতীতে হাতি ঢুকে পড়েছিল। দলটির গতিবিধির দিকে নজর রাখা হয়েছে।’’
শহর মেদিনীপুরে হাতি ঢোকার নজির রয়েছে। বছর কয়েক আগে কনকাবতী পেরিয়ে শহরের রাঙামাটিতে ঢুকে পড়েছিল হাতি। প্রাথমিক ভাবে বন দফতর মনে করছে, মহুলের গন্ধ পেয়েই হাতি জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই এলাকায় একাদিক দেশি মদের ভাটি রয়েছে। মদ তৈরিতে মহুল ব্যবহৃত হয়। কেউ কেউ মহুল ফুল বাড়ির বাইরে শুকোতে দেয়। তার গন্ধ হাতির দলকে আকৃষ্ট করে। বন দফতরের এক কর্তা বলেন, “শনিবার সকালে যে এলাকায় হাতি ঢুকে পড়েছিল, সেখানে মহুল রয়েছে। সেই গন্ধেই হাতি চলে আসে।’’
দলমার দলের পাশাপাশি এখন রেসিডেন্সিয়াল হাতিও বন দফতরের মাথাব্যাথা। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩০টি রেসিডেন্ট হাতি রয়েছে। খড়্গপুর বনবিভাগে রয়েছে ১০টি, ঝাড়গ্রামে ৮টি, মেদিনীপুর ও রূপনারায়ণ বিভাগে রয়েছে ১২টি হাতি। বন দফতরের এক সূত্র মানছে, জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলোয় বুনো হাতির উপদ্রব ঠেকাতে কিছু কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছিল। তবে সর্বত্র তা সমান ভাবে রূপায়িত করা যায়নি। ফলে, সারা বছর ধরে কখনও দলমার হাতির পাল, কখনও রেসিডেন্ট হাতির জ্বালায় জেরবার হতে হচ্ছে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীদের। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট বন দফতর।