দোরগোড়ায় দলছুট দাঁতাল। জামবনির পড়শুলি গ্রামে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
খিদে বড় বালাই! জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গ্রামের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে দরজায়, জানলায় শুঁড়ের ধাক্কা দিয়ে খাবার খুঁজল দলছুট এক দাঁতাল। শুক্রবার সকালে ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের পড়শুলি গ্রামের ঘটনা।
ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সীমানা লাগোয়া গিধনি বনাঞ্চলের লালবাঁধের জঙ্গলে রয়েছে ১২-১৩টি হাতির দল। তবে বেশ কিছুদিন ধরে দলছুট একটি নিঃসঙ্গ দাঁতাল এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাস খানেক আগে হাতিটি খাবারের খোঁজে ভাতুড় গ্রামে একটি মুদি দোকান ভেঙেছিল।
পড়শুলির বাসিন্দারা জানান, এ দিন সকাল সাড়ে ৫টায় হাতিটি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গ্রামে হাজির হয়। কুয়াশার জন্য পথচলতি লোকজন প্রথমে হাতিটিকে ঠাহর করতে পারেননি। হাতি দেখে শোরগোল পড়ে যায়। তবে হাতিটি শুঁড় দুলিয়ে একের পর এক বাড়ির উঠোনে হাজির হয়ে খাবার খুঁজতে থাকে। খগেন্দ্রনাথ মাহাতোর বাড়ির দরজা ভেঙে
ধানের বস্তা টেনে বার করে নেয় হাতিটি। এর পরে নির্মল মাহাতোর উঠোনে ফলানো বেশ কিছু বাঁধাকপিও সাবাড় করে দেয় হাতিটি।
কিন্তু তাতেও বোধহয় হাতিটির পেট ভরেনি। এর পরে একের পর বাড়ির দরজায় ও জানালায় শুঁড় দিয়ে ধাক্কা মারতে থাকে দাঁতালটি। ভয়ে কাঠ হয়ে যান বাড়ির বাসিন্দারা। স্থানীয় বন সুরক্ষা কমিটির সদস্য ও গ্রামবাসী ততক্ষণে হাতি খেদাতে শুরু করেন। পরে হাজির হন গোদরাশোল বিটের বনকর্মীরা। স্থানীয় কেন্দডাংরি পঞ্চায়েতের সদস্য বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘হাতিটি হুলার আগুনকেও ভয় পায় না। গ্রামবাসীর দরজায় ধাক্কা দেওয়ায় বাড়ির মহিলা-শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত হাতিটি গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। পরে তাড়া খেয়ে কুড়ারিয়ার জঙ্গলের দিকে চলে যায়।’’
পড়শুলি থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডের পানিবাঁকা জঙ্গল। বনকর্মী ও হুলাপার্টির দল হাতির দলকে ঝাড়খণ্ডের দিকে খেদিয়ে দিলেও তারা ফের গিধনির বনাঞ্চলে চলে আসছে। আর নিসঙ্গ দাঁতালটিকে কিছুতেই ঠাঁইনাড়া করা যাচ্ছে না। বন দফতরের দাবি, নিসঙ্গ হাতিটি এদিন পড়শুলি গ্রামে বাসিন্দারদের বাড়িতে ধান ও আনাজ খেলেও বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি করেনি।
ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড সীমানায় ১২-১৩টি হাতির দল রয়েছে। একটি নিঃসঙ্গ হাতি খাবারের খোঁজে পড়শুলি গ্রামে
ঢুকে পড়েছিল। খবর পেয়ে গিয়ে বনকর্মীরা হাতিটিকে জঙ্গলের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’’