হাতিসুমারি: মেদিনীপুুর রেঞ্জের ভগবতীচকের জঙ্গলে চলছে কাজ। বুধবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
হাতে ফিতে, জিপিএস, খাতা, পেনসিল। ভোর হতেই গোয়ালতোড়ের দুধপাথরির গভীর জঙ্গলে গিয়ে হাতিসুমারির কাজ করলেন নিমাই মাহাতো, দীনবন্ধু মাহাতোরা। বুধবার হল ‘এলিফ্যান্ট ডিস্ট্রিবিউশন ম্যাপিং’ অর্থাৎ জঙ্গলে গিয়ে হাতি দেখা, গণনা করা, পায়ের ছাপ নেওয়ার কাজ। ফিতে পেতে মাপজোকও করা হয়।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে হাতিসুমারি। চারদিন ধরে এই কাজ চলবে। বুধবার ছিল হাতিসুমারির দ্বিতীয় দিন। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু হচ্ছে। চলছে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীশগড়-একসঙ্গে চার রাজ্যে এই হাতি গণনার কাজ শুরু হয়েছে। হাতি যেখানে জল খেতে আসে সেখানে উঁচু মাচা বেঁধে হাতি গণনা করা, ছবি তোলার কাজ হবে আজ, বৃহস্পতিবার।
দুধপাথরির গভীর জঙ্গলে যে দলটি হাতিসুমারির কাজ করছে, সেই দলের চারজনের মধ্যে একমাত্র নিমাই মাহাতোরই পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। নিমাইবাবু বলছিলেন, “আগে দু’বার হাতিসুমারির কাজ করেছি। ফলে, কোনও সমস্যা হচ্ছে না।” বুধবার ভোর থেকে কাজ শুরু হওয়ায় দুপুর গড়াতেই পেট চুঁইচুঁই করতে শুরু করে সমীক্ষকদের। বন সুরক্ষা কমিটির এক সদস্য মুড়ি-জল নিয়ে হাজির হন। মাঝে একটু বিরতি নিয়ে সেই মুড়ি- জল খেয়ে নেন দীনবন্ধুরা।
নিমাইবাবু, দীনবন্ধুবাবু ছাড়া হাতিসুমারির দলে কাজ করছেন হামেদ মল্লিক, বিষ্ণুপ্রসাদ দুলে। বিষ্ণুপ্রসাদ বলছিলেন, “এই গভীর জঙ্গলের মধ্যে খাবার সুযোগ কোথায়? এই জল-মুড়িই যথেষ্ট। সকালে খেয়ে এসেছি। আবার সন্ধ্যায় ফিরে গিয়ে খাব।” তিনি মানছেন, “এত গভীর জঙ্গল। ঝুঁকি তো রয়েছেই। তবে কাজটা তো তুলতে হবে। তাই সতর্ক থেকেই আমরা কাজ করছি।”