বন দফতরের কর্মীদের পাহারা।
দিন কয়েক আগে এক দলছুট হাতির তাণ্ডবে জখম হয়েছিলেন তিন মহিলা। ক্ষতি হয়েছিল আলু-সহ শীতকালীন আনাজের। তারপরেই রাত পাহারার দাবিতে সরব হয়েছিলেন চাষিরা। পরিস্থিতি বুঝে চন্দ্রকোনায় জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় মাইক প্রচার এবং রাতে নজরদারি শুরু করল বন কর্মীরা। হুলা এবং টর্চ লাইট নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে বন কর্মীরা। স্থানীয়দের একাংশও তাঁদের সঙ্গে থাকছেন।
চন্দ্রকোনায় বন দফতরের আধিকারিক অসিত মণ্ডল বলেন, “বন দফতর থেকে রাত পাহারার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাইকিং করে জঙ্গল ঘেঁষা গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হচ্ছে।” বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে চন্দ্রকোনার ধামকুড়িয়া থেকে একটি দলছুট হাতি বেরিয়ে চন্দ্রকোনার একাধিক গ্রামে তাণ্ডব চালায়। ঢলবাঁধে এক তরুণীকে শুঁড়ে জড়িয়ে আছড়ে ফেলে ওই হাতিটি। আরও দুই মহিলা জখম হন। ক্ষতি হয় আলু চাষের। চাষিদের ক্ষোভ, আলু চাষের মরসুম শুরুর পরে প্রতি বছরই জঙ্গল থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢোকে হাতির দল। তাদের হানায় ফসল, ঘরবাড়ি-সহ নানা সম্পত্তি নষ্ট হয়। গত বছরও একই ঘটনা ঘটেছিল। এ বার আলুর দাম খুব চড়া। তাই এ বার গোড়া থেকেই আলু তুলতে তৎপর চাষিরা। চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জগজিৎ সরকার মানছেন, “চাষিদের দাবি ন্যায়ঙ্গত। বন দফতর পাহারার ব্যবস্থা করেছে।”
বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, দলছুট ওই হাতিটি এখন গড়বেতার পানিকোটর জঙ্গলে অবস্থান করছে। যে কোনও সময়ে সে ধামকুড়িয়া জঙ্গলে চলে আসতে পারে। এছাড়া গড়বেতা, শালবনির জঙ্গলেও হাতির দল ঘোরাফেরা করছে। তাই আমশোল, শোলাগেড়িয়া, ধামকুড়িয়া, ঘাটমুরা, নীলগঞ্জ, অযোধ্যা, রামগড়, লালগড়-সহ বিভিন্ন গ্রামে রাতে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। হুলা জ্বালিয়ে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে ঘুরছেন বন কর্মীরা। কিছু ক্ষেত্রে চাষিদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে হাতে টর্চ ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। রাতে জঙ্গল এলাকায় যাতে কেউ ঘোরাঘুরি না করে, সে কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।