এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
খুন নয়, আত্মহত্যা। মন্দারমণির রিসর্টে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার তৃণমূল নেতা আবুল নাসারের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এমনই ইঙ্গিত করছে ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট, দাবি পুলিশের। আমডাঙার আদহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুরাইয়া পারভিনের স্বামী আবুলের দেহ উদ্ধারের পরে পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ করা হয়। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। আবুলের সঙ্গী দু’জনকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। খোঁজা হচ্ছে আরও দু’জনকে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘ময়না তদন্তের রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।’’ ময়না তদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যা বলার পরেও কি খুনের মামলাই চলবে?
পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে আত্মহত্যার প্ররোচনার ধারায় মামলা হতে পারে। কিন্তু কেন আত্মহত্যা করলেন ওই তৃণমূল নেতা, জমি সংক্রান্ত বিবাদ না বিবাহ বহির্ভূত ‘সম্পর্কের’ জের, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আবুলের দুই সঙ্গী ধৃত তনুশ্রী মুখোপাধ্যায় ও আতাউর মণ্ডলকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট (ডিসিপ্লিন অ্যান্ড ট্রেনিং) আবু নুর হোসেন বলেন, ‘‘ধৃতদের বিবৃতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আবুলের সঙ্গে কোনও সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল কি না, জমি সংক্রান্তবিবাদ ছিল কি না, তদন্তে দেখা হচ্ছে।’’ মঙ্গলবারই তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আবুলের ময়না তদন্তের রিপোর্ট এসে পৌঁছয় মন্দারমণি উপকূল থানায়। সূত্রের দাবি, তাতে বলা হয়েছে, মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল না। চিকিৎসকেরা এটিকে আত্মহত্যাই বলেছেন।
আবুলের স্ত্রী আদহাটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুরাইয়া পারভিনের অবশ্য দাবি, গঙ্গাসাগরে এক ঠিকাদারের কাছে পাওনা নয় লক্ষ টাকা আনতে গিয়েই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তাঁর স্বামী। তিনি বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আমডাঙা ব্লক অফিসে বৈঠক চলাকালীন ঘন ঘন ফোন আসছিল। বিরক্ত হচ্ছিল। তার পর বলে, গঙ্গাসাগরে পাওনা টাকা আনতে যাবে। পাড়ার যুবক আতাউলকে নিয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়ে যায়।’’
তা হলে মন্দারমণি কেন গেলেন আবুল? সরাসরি জবাব না দিয়ে আবুলের শ্যালক মনতাজুল হকের দাবি, ‘‘বিরাট ষড়যন্ত্র রয়েছে। দলের প্রভাবশালীরাও ব্যবসায়িক কারণে এতে জড়িত থাকতে পারে। তাই সিবিআই বা সিআইডি তদন্ত চাইছি।’’