পরিষেবা পাচ্ছেন না রোগীরা

আয়োজনেও চালু হয়নি ডায়ালিসিস

চালু হয়নি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ডায়ালিসিস পরিষেবা। অসহায় গরিব রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

এগরা: শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫০
Share:

পরিকাঠামোই সার, এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালা। নিজস্ব চিত্র

ডায়ালিসিস পরিষেবার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো সুনিশ্চিত করে স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দিলেও আজ পর্যন্ত চালু হয়নি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ডায়ালিসিস পরিষেবা। অসহায় গরিব রোগীরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। অবিলম্বে সরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবা চালু কারার আবেদন জানালেন রোগীর পরিজনেরা।

Advertisement

এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে বিনামূল্যে রোগীদের আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এগরা মহকুমায় পটাশপুর, এগরা, ভগবানপুর-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পাশের রাজ্য ওড়িশা থেকে প্রচুর রোগী এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিষেবা হল ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা। অভিযোগ এতদিনেও হাসপাতালে সেই আধুনিক পরিষেবা শুরু করেনি স্বাস্থ্য দফতর। এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পাঁচ শয্যা বিশিষ্ট ডায়ালিসিস ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা।

সূত্রের খবর গত বছর ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে ডায়ালিসিসের জন্য প্রয়োজনীয় আট দফা পরিকাঠামো সুনিশ্চিত করে স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই চিঠি দেওয়ার ২১ মাস পরেও এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এখনও চালু হয়নি ডায়ালিসিস পরিষেবা। অসহায় গরিব রোগীরা নিরুপায় হয়ে নার্সিংহোমের উপরে নির্ভরশীল হচ্ছেন। সেখানে অনেক বেশি টাকা দিয়ে ডায়ালিসিস করাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। অবিলম্বে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস চালু করতে আবেদন জানালেন রোগীর পরিজনেরা।

Advertisement

একজন রোগীকে সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালিসিস করাতে হয়। প্রতি সপ্তাহে আনুমানিক খরচ ৬ হাজার টাকা। প্রতি মাসে সেই অঙ্কটা প্রায় ২৪ হাজার টাকা। একজন গরিব পরিবারের পক্ষে সেই টাকা জোগাড় করা কার্যত অসম্ভব। পশ্চিম মেদিনীপুরে বেলদা ঠাকুরচকের বাসিন্দা বছর কুড়ির শেখ রেজাউল এগরার একটি নার্সিংহোমে ডায়ালিসিস করাতে আসেন। বাবা এবং মা ভিক্ষা করে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করেছেন। রেজাউল বলেন, ‘‘কতদিন মা-বাবা ভিক্ষে করে আমার চিকিৎসা করাতে পারবে জানি না। হয়তো একদিন টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে এই পরিষেবা চালু হলে আমাদের মতো গরিবদের সুবিধা হত।’’

এগরা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কৌশিক দাস মহাপাত্র গত আট মাস ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। প্রতি সপ্তাহে তাঁকে ডায়ালিসিস করাতে হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক সঙ্কটের কারণে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীদের কাছে টাকা ধার করে কোনওরকমে কৌশিকের চিকিৎসা চলছে।

এই পরিস্থিতিতে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবা চালু হওয়া নিয়ে আশার কথা শোনাতে পারেননি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এই মুহূর্তে ডায়ালিসিস পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিষয়টি বিবেচনার জন্য স্বাস্থ্য ভবনে পুনরায় জানানো হবে।’’

ফলে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবার সুযোগ রোগীরা কবে পাবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গেল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement