গোপগড় ইকোপার্ক।—ছবি সংগৃহীত।
জেলার বড় ছ’টি পার্কে বছরভর প্রচুর পর্যটক আসেন। বিশেষ করে শীতের মরসুমে। পার্কগুলি থেকে ভাল আয়ও হয়। তবু সাজিয়েগুছিয়ে পার্কগুলিকে আরও আকর্ষণীয় করার কোনও উদ্যোগ নেই। অযত্নের ছাপও রয়েছে পার্কের আনাচেকানাচে।
বন দফতরের মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বেরওয়ালের আশ্বাস, ‘‘পার্কগুলিকে আরও সুন্দর করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ’’ জেলার এক বন আধিকারিক অবশ্য জানালেন, অর্থাভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছে।
অথচ, জেলার বড় পার্কগুলিতে বছরে প্রায় ৫ লক্ষ পর্যটক আসেন। পার্কগুলি থেকে বছরে আয়ের পরিমাণ প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। পশ্চিম মেদিনীপুরের বড় পার্কগুলির মধ্যে রয়েছে গোপগড় ইকোপার্ক, পরিমলকানন, সুকুমার সেনগুপ্ত স্মৃতি উদ্যান (পুলিশ লাইন পার্ক), ক্ষুদিরাম পার্ক, বিদ্যাসাগর পার্ক, হিজলি ইকোপার্ক। এর মধ্যে গোপগড় ইকোপার্ক, সুকুমার সেনগুপ্ত স্মৃতি উদ্যান, ক্ষুদিরাম পার্ক, বিদ্যাসাগর পার্ক রয়েছে মেদিনীপুরে। হিজলি ইকোপার্ক রয়েছে খড়্গপুরে। পরিমলকানন রয়েছে চন্দ্রকোনা রোডে। বন দফতরের এক সূত্রে খবর, ২০১৮-’১৯ সালে জেলার এই ছ’টি বড় পার্কে সবমিলিয়ে পর্যটক এসেছেন ৪,৯০,৩৭১ জন। পার্কগুলি থেকে আয় হয়েছে ৬০,৪৭,৩২৩ টাকা।
শীতের মরসুমে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা জেলার এই ইকো ট্যুরিজম পার্কগুলি। অথচ অনেক ক্ষেত্রে পার্কগুলির অবস্থা তথৈবচ। কোথাও পার্কের পিকনিক শেডগুলো ধুঁকছে, মেঝেতে খানাখন্দ, আবার কোথাও পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। ফলে, পিকনিক করতে এসে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জেলার এক বন আধিকারিক মানছেন, ‘‘শীতের সময়ে এই সব পার্কে প্রচুর মানুষ বেড়াতে আসেন। ফলে, স্থানীয় অনেকের কাছে রুজি-রোজগারের সুযোগ আসে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘উদ্যোগ রয়েছে। তবে অর্থাভাবে সব কাজ সময় মতো করা সম্ভব হয় না।’’
দফতরের এক সূত্রে খবর, এক সময়ে পার্কগুলির হাল ফেরাতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কোথায়, কী পরিকাঠামো গড়তে হবে, কী প্রয়োজন, সে ক্ষেত্রে কত খরচ হবে তার হিসেব করা হয়েছিল। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী গোপগড় ইকোপার্কের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ছিল ৯১ লক্ষ টাকা, পরিমলকাননে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা, সুকুমার সেনগুপ্ত স্মৃতি উদ্যানে ২৯ লক্ষ টাকা, ক্ষুদিরাম পার্কে ৩০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, বিদ্যাসাগর পার্কে ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা। অবশ্য অর্থের অভাবে এই সময়ের মধ্যে সব কাজ করা সম্ভব হয়নি।
বন দফতরের এক সূত্রের দাবি, গোপগড় ইকোপার্কে যেমন নতুন কিছু পরিকাঠামো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রজাপতি উদ্যান, অর্কিডেরিয়াম, রঙিন মাছের মৎস্যাধার, প্রাকৃতিক পথ, নিজস্বী (সেলফি) জোন প্রভৃতি। পর্যটকদের মতে, পার্কগুলিতে দোলনা, ঘূর্ণি-সহ আরও উপকরণ আনা যেতে পারে। ট্রয় ট্রেন চালু করা যেতে পারে। ওই বন আধিকারিক বলেন, ‘‘পার্কগুলিকে আরও আকর্ষণীয় করতে কিছু প্রকল্প রয়েছে।’’