—ফাইল চিত্র।
রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোকে সামনে রেখে অরণ্যশহরে তৃণমূলের গোষ্ঠী রাজনীতির সমীকরণ!
দিন কয়েক আগে বিজেপি-র বিরুদ্ধে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন ছত্রধর। ঝাড়গ্রাম শহরের রূপছায়া মোড়ের যে দলীয় কার্যালয়ে ছত্রধর সভা ডেকেছিলেন, সেখানে মূলত তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দুর্গেশ মল্লদেব ও তাঁর অনুগামীরাই বসেন। সম্প্রতি পুরসভার পূর্বতন পুর-প্রশাসনিক বোর্ড বাতিল করে নতুন প্রশাসনিক বোর্ড গঠন করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসকের পদ থেকে মহকুমাশাসককে সরিয়ে শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রশান্ত রায়কে নতুন পুরপ্রশাসনিক বোর্ডের সরকার মনোনীত চেয়ারপার্সন করা হয়েছে। আগের পুরপ্রশাসনিক বোর্ডে থাকা প্রাক্তন পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব নতুন পুর-প্রশাসনিক বোর্ডে নেই। পুরসভার রাশ প্রশান্তের হাতে চলে যাওয়ায় হতাশ দুর্গেশের অনুগামীরা। অন্যদিকে, তৃণমূলের অন্দরের খবর, দুর্গেশ এখন তৃণমূল নেত্রীর তেমন সুনজরে নেই। তাঁর ছেলে বিক্রমাদিত্য গত বছর বিজেপিতে গিয়েও কয়েকমাস আগে তৃণমূলে ফিরেছেন। আবার বিনপুরের মাগুরায় শুভেন্দুর উদ্বোধন করা কালীপুজোর কমিটিতে দুর্গেশ থাকায় তা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তিনি। যদিও সেদিন শুভেন্দু থাকাকালীন মঞ্চে ওঠেননি দুর্গেশ।
কয়েক মাস আগে তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতির দায়িত্ব পেলেও শাসকদলের জেলা রাজনীতিতে দুর্গেশ এখন কার্যত কোণঠাসা বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে বুধবার দুর্গেশের দলীয় কার্যালয়ে ছত্রধরের সাংবাদিক বৈঠকটি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে ছত্রধরের পাশেই ছিলেন দুর্গেশ। সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন দুর্গেশ-ঘনিষ্ঠ শহর তৃণমূলের সহ-সভাপতি গোবিন্দ সোমানি। এছাড়াও ছিলেন শহর যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি উজ্জ্বলকান্তি পাত্র, জেলা কমিটির সদস্য নবু গোয়ালা, গৌতম মাহাতো, জেলা যুব কমিটির সদস্য কাজরী মিত্র, তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতা জয়দীপ হোতা। ছত্রধরের আর এক পাশে ছিলেন জেলা তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র সুব্রত সাহা। কিন্তু শহরে ছত্রধর সাংবাদিক বৈঠক করলেও সেখানে তৃণমূলের শহর সভাপতি প্রশান্ত রায়কে দেখা যায়নি। যদিও প্রশান্ত বলছেন, ‘‘ওই সাংবাদিক বৈঠকের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’’ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা বলছেন, ‘‘সাংবাদিক বৈঠকে সেভাবে কাউকে ডাকা হয়নি। কাছাকাছি যাঁরা ছিলেন, তাঁদের ফোন করে ডেকেছিলাম। আর সাংবাদিক বৈঠকে নির্দিষ্ট করে কাউকে ডাকার নির্দেশও ছিল না।’’
সুব্রত যাই বলুন, প্রশ্ন উঠেছে, শহর তৃণমূলের সহ-সভাপতি গোবিন্দ সোমানি সাংবাদিকে বৈঠকে থাকলেন। অথচ প্রশান্তকে ডাকাই হল না। এই মুহূর্তে শীর্ষ নেতৃত্ব জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারে ছত্রধরের উপরে ভরসা করছেন। ফলে ছত্রধরের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করে রাজ্য নেতৃত্বকে কী কোনও বার্তা দিতে চাইছেন দুর্গেশ? দুর্গেশ অবশ্য মৌন রয়েছেন!