কাঁথি ইয়ুথ গিল্ডে মণ্ডপের মধ্যে দর্শনার্থী। নিজস্ব চিত্র
করোনার কারণে হাইকোর্টের নির্দেশের অনেক আগেই মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, অষ্টমীর অঞ্জলি বাতিল, মন্ডপের ১০ মিটার দূরে লোহার রেলিং লাগিয়েছে তমলুক শহরের প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন পায়রাটুঙি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। হাইকোর্টের নির্দেশের পরে শহরের বড় পুজোগুলির অন্যতম অলস্টার ক্লাব, ওয়ান হার্টেড ক্লাব, ইয়ুথ স্পোর্টিং ক্লাব মণ্ডপের সামনে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড লাগিয়েছে। ছোট পুজো কমিটিগুলির বেড়া দেওয়ার মতো পরিসর না থাকায় মণ্ডপ দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশ যথাযথ পালিত হচ্চ্ছে কিনা তা সপ্তমী থেকেই নজরে আসবে বলে পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি। তাঁদের মতে, সপ্তমী থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়বে।
তবে ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় কাঁথি, এগরা-সহ অনেক এলাকায় পুজো কমিটিগুলি মণ্ডপের সামনে নির্দেশ মেনে বাঁশের ব্যারিকেড করলেও তার বাইরে যে ভাবে দর্শনার্থীরা ভিড় করেছিলেন তাতে সামাজিক দূরত্ব বিধি মানার বালাই চোখে পড়েনি। পুরনো দিঘা বাসস্ট্যান্ডের ইয়ুথ গিল্ড ক্লাবের পুজোয় দেখা গেল মণ্ডপে ঢোকার আগে জীবাণুনাশক ট্যানেল রাখা হয়েছে। সেখানে দর্শকদের জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। তারপরে তাঁরা সরাসরি মূল মন্ডপে গিয়ে ঢুকছেন। কোথাও বাঁশের বা অন্য ধরনের ব্যারিকেড নেই। কাঁথি শহরের সরস্বতী তলা এবং কাঁথি পুরসভার প্রশাসনিক ভবনের পাশে যে সব পুজো হচ্ছে সেখানে কোনওরকম জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা চোখে পড়েনি।
এগরা ফ্রেন্ডন্স রিক্রিয়েশন ক্লাবে গোটা মণ্ডপ চত্বর বাঁশ দিয়ে পাঁচ মিটার ব্যবধানে ঘিরে রাখা হয়েছে। মণ্ডপের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সার্কেল করা রয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য মাস্ক ও স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। পটাশপুরের টিকরাপাড়া রেনবো অ্যাথেলেটিক ক্লাবের মণ্ডপের দশ মিটার দূরে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে কম সংখ্যক মানুষকে মণ্ডপের সামনে আসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। হাইকোর্টের রায়ের পর শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের নোনাকুড়ি সাংস্কৃতিক সংস্থা মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বাইরে বের করে এনেছে। তার ঠিক ১০ মিটার দূরে বাঁশের ব্যারিকেড করে লাগানো হয়েছে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড। পাঁশকুড়ার মেচগ্রাম সমাজ শিক্ষাকেন্দ্র পুজো মণ্ডপ থেকে ১০ মিটার দূরে বাঁশের ব্যারিকেড রয়েছে। কোলাঘাটের সংকেত ও ছাত্র সংঘের দুর্গাপুজো কমিটির মণ্ডপ থেকে ১৭ ফুট দূরে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। দর্শনার্থীদের মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার বিলি করা হচ্ছে। মণ্ডপের পাশে অ্যাম্বুল্যান্স ও অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে।
তবে ষষ্ঠীতেই যে ভাবে কিছু মণ্ডপে করোনা সুরক্ষা বিধিতে ঢিলেমি দেখা গেল তাতে আগামী তিন দিন সেই বিধি হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কতটা পালিত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।