KMC ELECTION 2020

ক্লাবই ভোটের উৎস মানলেন বিধায়কও!

কমিটি গড়ার কারণ হিসেবে বিধায়কের ব্যাখ্যা, ‘‘রাজ্য সরকার এত উন্নয়ন করছে, এতগুলো প্রকল্প চলছে, সেই ক্লাবগুলি এসব নিয়ে কতটা আগ্রহী বা মানুষকে বোঝাচ্ছেন এসবের জন্যই ক্লাব সমন্বয় মঞ্চ গড়ে তোলা।’’ বুধবার গড়বেতা ২ ব্লকের যে ৪ টি অঞ্চল এই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে, সেই অঞ্চলগুলির ১৮ টি ক্লাবকে নিয়ে সভা করে ১৭ জনের একটি কমিটি গড়েছেন আশিস।

Advertisement

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

গড়বেতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০৫:০১
Share:

ক্লাব সমন্বয় মঞ্চ তৈরির সভা। বগড়িডিহিতে। নিজস্ব চিত্র

যা ছিল বিরোধীদের কটাক্ষ। তাই এখন বিধায়কের মুখে।

Advertisement

ক্লাবগুলিকে সরকারি অনুদান দেওয়া নিয়ে এতদিন বিরোধীরা সমালোচনা করে বলত, আসলে এটা খয়রাতির রাজনীতি। অনুদান দিয়ে ভোট নেওয়ার কৌশল। গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী প্রকারন্তরে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘‘সরকার ওদেরকে (ক্লাব) দিচ্ছে। ওদের কাছ থেকে সরকার তো বেনিফিট আশা করতেই পারে!’’ সম্প্রতি গড়বেতা বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত দুটি ব্লকের অনুদানপ্রাপ্ত ক্লাবগুলিকে নিয়ে দু’টি সমন্বয় মঞ্চ গড়ে তোলা হয়। দু’টি মঞ্চেরই মাথার উপর চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন বিধায়ক স্বয়ং। মঞ্চ পরিচালনার জন্য কমিটিতে রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও। এ প্রসঙ্গে বিরোধীদের সমালোচনা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরই ‘দেনা-পাওনা’ সংক্রান্ত মন্তব্য করেন বিধায়ক।

তৃণমূল বিধায়ক জানিয়ে দিতে ভোলেননি, ‘‘রাজ্য সরকারের অনুদান পাচ্ছে ক্লাবগুলি, নিজেদের উন্নয়নে ক্লাবগুলি সেই অর্থ ব্যয় করার পরেও কতটা তারা সরকারকে সহযোগিতা করছে সেটাও দেখতে হচ্ছে।’’ বিধায়কের এই মন্তব্যে আসরে নেমেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি মদন রুইদাস বলেন, ‘‘তৃণমূল তো প্রতিটি ভোটে সরকারি টাকার অপব্যবহার করে। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। সরকারি অর্থ ক্লাবগুলিকে দেওয়ার পর তাদের এ বার দলের জন্য ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা হবে।’’

Advertisement

বিধানসভা ভোট এক বছরেরও বেশি বাকি। তবু কিছুটা আগে থেকেই সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ক্লাবগুলিকে সংগঠিত করার কাজে নেমে পড়ল তৃণমূল। কেন এই তৎপরতা? বিরোধীরা বলছে, ভোটচিত্রে নজর রাখলেই স্পষ্ট হবে তৎপরতার কারণ। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে গড়বেতা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী আশিস ৬০ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতে বিধানসভায় গিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বিধানসভা এলাকার ১৬ টি অঞ্চলের মধ্যে ১৫ টিতেই নিরঙ্কুশ আধিপত্য বজায় রাখে তৃণমূল। বেশিরভাগ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই জয়ী হন ঘাসফুলের প্রার্থীরা। যদিও একবছর পরেই ছবিটা ঘুরে যায়। গত লোকসভা ভোটে গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল বিজেপি। দলের পর্যালোচনা বৈঠকে এনিয়ে দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমকও খান বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পরই গড়বেতায় ছুটে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপরই গড়বেতা ‘পুনরুদ্ধার’ করতে উঠেপড়ে লাগেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির পর শুরু হয়েছে ‘বাংলার গর্ব মমতা’। এরই মধ্যে বিধায়ক গড়লেন ক্লাব সমন্বয় কমিটি।

বৃহস্পতিবার ধাদিকায় গড়বেতা ১ ব্লকের ১২ টি অঞ্চলের ৩০ টি ক্লাবকে নিয়ে ২১ জনের একটি কমিটি গড়েছেন তিনি। দু’টি কমিটির একটি করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement