গোয়ালতোড় উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবিরের তোরণ।
শুক্রবার থেকে গোয়ালতোড়ে শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির। গোয়ালতোড় উচ্চ বিদ্যালয়ে (বালক) এই শিবির চলবে শনিবার পর্যন্ত। তবে এ বার এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা নন, শিবিরে পরিষেবা দেবেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৮ জন চিকিৎসক। শিবিরের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন ৪৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীও।
রাজ্যে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে এ ধরনের শিবির প্রথম হয়েছে কেশিয়াড়িতে। সেখানে এসেছিলেন কলকাতার এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা। এসএসকেএম শুরু করেছে। রাজ্যের নির্দেশ ছিল, অন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিকেও একইভাবে প্রান্তিক এলাকায় শিবির করতে হবে। সেই মতো এ বার গ্রামের ‘দুয়ারে’ পৌঁছচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালও। মেদিনীপুর মেডিক্যাল প্রথম ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবির করছে গোয়ালতোড়ে। শিবিরের প্রস্তুতি শেষ। চলছে প্রচার। আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে রোগীর খোঁজখবর নিয়ে টোকেন (স্লিপ) বিলি করেছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, গোয়ালতোড়ের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় এই শিবির ঘিরে সাড়া পড়েছে, দু'দিনের এই শিবিরে প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি রোগীর চিকিৎসা করা হবে।
গোয়ালতোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবেশপথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স ঝুলিয়ে তোরণ করা হয়েছে। টাঙানো হয়েছে ‘দুয়ারে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার’ লেখা ফ্লেক্স। ওই এলাকায় সমীক্ষা করেছেন আশাকর্মীরা। বাড়ি বাড়ি পরিদর্শন চলেছে। এ কাজে যুক্ত ছিলেন ১৩২ জন আশাকর্মী। কে, কোন উপসর্গে ভুগছেন, সে সব নথিভুক্ত করা হয়েছে। ওই রোগীদের শিবিরে আসার কথা জানানোও হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘শিবির শুরু হবে সকাল ১০টায়। আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টোকেন (স্লিপ) বিলি করেছেন। সেই টোকেন নিয়ে শিবিরে এলে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে।’’
জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতির ব্যবস্থাপনায় এই ‘দুয়ারে ডাক্তার’ শিবিরে ১৫০০ থেকে ১৬০০ রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে। ৯টি ক্ষেত্রে এই পরিষেবা মিলবে। এগুলির মধ্যে রয়েছে নাক কান গলা (ইএনটি), চক্ষু, চর্ম, অস্থি, শিশু, মানসিক, মেডিসিন, জেনারেল সার্জারি প্রভৃতি। পরিষেবা দেবেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের ২৮ জন চিকিৎসক। এরমধ্যে জেনারেল মেডিসিন বিভাগের ৭ জন চিকিৎসকের থাকার কথা, জেনারেল সার্জারি বিভাগের ৪ জন চিকিৎসক থাকবেন, ইএনটি বিভাগে ৩ জন চিকিৎসক, শিশু বিভাগে ৪ জন, অস্থি বিভাগে ২ জন, মানসিক ও চর্ম বিভাগে ২ জন করে চিকিৎসক থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
দু'দিনের শিবির সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শিবিরে সুগার, প্রেশার, রক্ত, ইসিজি পরীক্ষার আলাদা আলাদা টেবিল করা হচ্ছে। টোকেন নিয়ে গিয়ে শিবিরের কাউন্টারে জমা দেওয়ার পর, মাইকে টোকেন নম্বর ও নাম ধরে ডাকা হবে রোগীদের। রোগীদের যাতে হুড়োহুড়ি না পড়ে, সে জন্য থাকবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। জেলা প্রশাসনের তরফে শিবিরের তদারকির দায়িত্বে থাকছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পিনাকীরঞ্জন প্রধান। তিনি সমস্ত দিকে নজর রাখবেন, নোডাল অফিসার হিসেবে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘যাঁদের পরিষেবা লাগবে, তাঁদেরই পরিষেবা দেওয়া হবে। বিনামূল্যে ওষুধপত্র দেওয়া হবে।’’ যাঁদের প্রয়োজন হবে, তাঁদের মেডিক্যালে নিয়ে এসেও চিকিৎসা করা হবে পরবর্তী সময়ে।