আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজে পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে চিকিৎসকদের সংগঠনগুলি। একাধিক দাবি নিয়ে আরজি করে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ডাকে সাড়া মিলেছে রাজ্যের সর্বত্র। যদিও এই আন্দোলনের সঙ্গে থেকেও মানবিকতার খাতিরে সোমবার দিনভর রোগী পরিষেবা স্বাভাবিক রাখলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র এবং সিনিয়র চিকিৎসকেরা। একই ছবি দেখা গেল জেলার নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং তিন মহকুমা হাসপাতাল— হলদিয়া, কাঁথি এবং এগরাতেও। তবে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের রেসিডেন্ট ডাক্তারদের সংগঠন।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের দেওয়ালে দেওয়ালে বিভিন্ন পোস্টার দেখা যাচ্ছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে কোনওটিতে লেখা, ‘এটাই জেগে ওঠার সময়।’ কোথাও লেখা, ‘রাক্ষসদের বিনাশ হোক, সুস্থ হোক পরিষেবা।’ যদিও হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে সোমবার। রোগীও দেখেছেন চিকিৎসকেরা। জরুরি বিভাগের পরিষেবাও স্বাভাবিক ছিল।
তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক শিবশঙ্কর দে বলেন, “আরজি করের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত আতঙ্কিত। হাসপাতালের ভিতরে যে ভাবে নৃশংস অত্যাচারের পর মহিলা চিকিৎসক খুন হয়েছেন তার নিন্দার ভাষা নেই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে যে আন্দোলন চলছে, আমরা তাঁদের সঙ্গে আছি। তবে সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে সোমবার সকালে আমরা হাসপাতালের সমস্ত পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছি। সেই সঙ্গে আরজি করের গোটা ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি, হাসপাতালের সুরক্ষার দিকটি নিয়েও আমরা নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছি”। সোমাশ্রী মান্না নামে আর এক চিকিৎসকের কথায়, “আমরা এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষকেও পাশে পেতে চাই। আমরা তাঁদের চিকিৎসা দিচ্ছি। কিন্তু, তারই পাশাপাশি নিজেদের সুরক্ষার জন্য আন্দোলনে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানাব।” তবে মঙ্গলবার থেকে হাসপাতালের পরিষেবা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শর্মিলা মল্লিককে এই মর্মে একটি চিঠি দিয়েছেন হাসপাতালের রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের সংগঠন। বিকেলে মোমবাতি মিছিল হয়।
পরিষেবা বন্ধ এবং আন্দোলন নিয়ে অধ্যক্ষ শর্মিলা বলেন, “সোমবার দিনভর হাসপাতালের পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যভবন থেকে টেলিফোনে এই সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমরা বিস্তারিত রিপোর্ট জানিয়ে দিয়েছি। আগামিদিনে কী পরিস্থিতি হবে, সেই দিকে আমাদের সবার নজর থাকছে।’’