DJ Box

বিশ্বকর্মায় ডিজে-র তাণ্ডব আতঙ্ক বাড়াচ্ছে পুজোয়

তমলুক শহর, হলদিয়া মেচেদা, নরঘাট বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় মণ্ডপে তারস্বরে মাইক-সাউন্ড বক্স বাজানোর জেরে শব্দ তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ থেকে যানচালক-আরোহীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩৪
Share:

তমলুক জেলা হাসপাতালের প্রাচীরের পাশেই বাজছে বিশ্বকর্মা পুজোর বিশালাকার সাউন্ড বক্স। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

করোনা পরিস্থিতির জেরে গত দু’বছর ধরে ম্লান ছিল পুজোর আনন্দ। করোনা পরিস্থিতি উন্নতির পর এখন অনেকটাই ছন্দে ফিরেছে মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন। পুজোর মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্বকর্মার হাত ধরে। কিন্তু পুজোর মরসুমের শুরুতেই জেলা সদর তমলুক শহর, হলদিয়া মেচেদা, নরঘাট বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় মণ্ডপে তারস্বরে মাইক-সাউন্ড বক্স বাজানোর জেরে শব্দ তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ থেকে যানচালক-আরোহীরা।

Advertisement

অভিযোগ উঠেছে, সরকারি শব্দবিধি ভেঙে ডিজে-সহ মাইক, সাউন্ড বক্স যথেচ্ছ বাজানো হলেও পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কোনও পদেক্ষেপই করা হয়নি। ফলে পুজোর মরসুমের শুরুতেই শব্দদৈত্যের এমন তাণ্ডব দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে কোথায় দাঁড়াবে তা ভেবে আতঙ্কিত মানুষজন।

বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়, শঙ্করআড়া ও গঞ্জনারায়ণপুর বাজারের একাধিক পুজো মণ্ডপে প্রবল শব্দে ডিজে সহ মাইক ও সাউন্ড বক্স বাজানো হয় বলে অভিযোগ। জেলা হাসপাতালের পাশেই একাধিক বিশ্বকর্মা পুজোj মণ্ডপে ডিজে সহ মাইক-সাউন্ড বক্স বাজানো হয়। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদেরও সমস্যা হয়। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ও তমলুক-শ্রীরামপুর রাজ্য সড়কে যাতায়াতকারী বাসের চালক, আরোহী সহ অন্যান্য গাড়ির চালকেরাও সমস্যায় পড়েন। রবিবারও বিভিন্ন পুজোমণ্ডপে মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজতে দেখা গিয়েছে। একইভাবে নন্দকুমার-দিঘা ১১৬ বি জাতীয় সড়কে নরঘাট বাজারে তৃণমূল এবং সিপিএম প্রভাবিত দু’টি শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে কয়েক মিটারের দূরত্বে দুটি পুজোর মণ্ডপে প্রবল শব্দে মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজানো হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মেচেদা বাজারে থার্মাল মোড় ও মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে একাধিক বিশ্বকর্মা পুজোর মণ্ডপে ডিজে, মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজানোর অভিযোগ উঠেছে। শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা তমলুকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (অ্যাসোসিয়েশন ফর বেটার লিভিং) সম্পাদক মানবেন্দু রায় বলেন, ‘‘’সরকারি আইন অনুযায়ী দিনের বেলায় ৫৫ ডেসিবল এবং রাতের বেলায় ৪৫ ডেসিবলের বেশি মাত্রায় মাইক-সাউন্ডবক্স বাজানোয় নিষেধ রয়েছে। হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যেও মাইক, সাউন্ডবক্স বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সে সবের কোনও তোয়াক্কা না করে সর্বত্রই যথেচ্ছ প্রবল শব্দে মাইক, সাউন্ড বক্স বাজানো হয়েছে। এমনকী হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। পুলিশ-প্রশাসনের তরফেও মাইক-সাউন্ড বক্স বাজানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি’’

জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘শব্দ বিধি ভেঙে পুজো মণ্ডপে মাইক-সাউন্ডবক্স বাজানো বন্ধ করতে জেলা জুড়ে প্রচার চালানো হয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজোর মণ্ডপে মাইক বাজানো নিয়ে যে সব এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজোর সময়েও যাতে শব্দবিধি মেনে চলা হয় সেজন্য পুজোর প্রস্তুতি বৈঠকে পুজো কমিটি, ক্লাব কর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।’’

শিল্পশহরেও বিশ্বকর্মা পুজোয় লাগামছাড়া ডিজে’র তাণ্ডব দেখা গিয়ছে। পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের লোকজন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিজ্ঞান পরিষদের পক্ষে রায়পদ কর বলেন, ‘‘প্রশাসন বলছে ডিজে নিষিদ্ধ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদ ও হলদিয়া থানায় যোগাযোগ করেও শব্দের তাণ্ডব থেকে নিস্তার মেলেনি।’’ হলদিয়া মহকুমা পুলিশের অবশ্য দাবি, ডিজে বাজানোর অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement