দাঁতনে দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
বেঙ্গালুরুতে মহাজোটের বৈঠকে শামিল কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ ২৬টি বিরোধী দল। এই আবহে সিবিআই-ইডির বিরুদ্ধে হাওয়া তুলতে ‘পরিবারকেন্দ্রিক’ দলগুলি একজোট হচ্ছে বলে খোঁচা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ! সঙ্গে ভোট নিয়ে একহাত নিলেন এ রাজ্যের বিডিওদেরও।
মঙ্গলবার সকালে খড়্গপুরে চা-চক্রে যোগ দেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ। মুখোমুখি হন সংবাদমাধ্যমের। সেখানেই দিলীপ বলেন, “নির্বাচন এলেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জোট করার এমন একটা পরম্পরা তৈরি হয়ে গিয়েছে। আসল উদ্দেশ্য সিবিআই, ইডির বিরুদ্ধে হাওয়া তোলা। কারণ এই সমস্ত দলগুলি পরিবারকেন্দ্রিক দল। বেশিরভাগ নেতা দুর্নীতিতে জড়িয়ে সিবিআই-ইডির মামলায় ঝুলছে। সেখান থেকে কীভাবে বাঁচা যায় তাঁর চক্রান্ত চলছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ইডি-সিবিআইকে বলে দিয়েছেন কোনও দোষীকে ছাড়া হবেনা যতই ওরা জোট করুক, ঘোঁট করুক।”
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাস প্রসঙ্গেও মহাজোটের নীতির প্রশ্ন তুলেছেন দিলীপ। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র হত্যার নজির সবচেয়ে বেশি। দুর্ভাগ্য বাকি বিরোধী দলগুলি এ নিয়ে কিছুই বলছে না। কংগ্রেস, সিপিএমের লোকেরা মারা যাচ্ছে অথচ তাদের জাতীয় নেতৃত্ব কিছু বলছে না। একসঙ্গে বসে চা খাচ্ছে।” বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সুরে সপর মিলিয়ে দিলীপ জুড়েছেন, “তৃণমূল হারবে জেনেই পরিকল্পনা করেছিল প্রশাসনকে কাজে লাগানোর। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিডিওরা। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র হত্যায় এই বিডিওরাই সবচেয়ে বড় অপরাধী।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী ও পরাজিত দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন দিলীপ। আক্রান্ত কর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। দাঁতন ২ ও মোহনপুর ব্লকের একাধিক এলাকায় যান তিনি। বিজেপির অভিযোগ, এখানে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত দলের কর্মীরা। অনেকেই ঘরছাড়া। দাঁতন ২ ব্লকের বাঁশিচকে তেমনই কয়েকজন আক্রান্ত ও ঘরছাড়া কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন দিলীপ। ব্লকেরই হরিপুর পঞ্চায়েতের জানাবাড়েও একই কর্মসূচি সেরেছেন তিনি। তারপর মোহনপুরের অঁরুয়ায় জয়ী ও পরাজিত প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক করেন। দিলীপ বলেন," বাইরের লোকজন এসে আমাদের লোকজনকে মেরেছে। হাসপাতালে ভর্তি আছে। কয়েকজন ফিরেছে।’’এ দিন মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাথরার পালজাগুল, পাচরা প্রভৃতি এলাকাতেও যান বিজেপি সাংসদ। দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। বিজেপির অভিযোগ, ভোটের পরে এই এলাকায় হিংসা ছড়াচ্ছে তৃণমূল। কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছে। দিলীপের দাবি, ‘‘ তৃণমূলের এত সন্ত্রাস সত্ত্বেও বিজেপি ভাল ফল করেছে।’’ তৃণমূলের অবশ্য দাবি, ওই এলাকায় শান্তিই রয়েছে।