—ফাইল চিত্র।
কখনও নাম করে। আবার কখনও নাম না করে সমালোচনা, কটাক্ষ, হুমকি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া জঙ্গলমহলে তাঁর নিশানায় যে শুভেন্দু অধিকারী রয়েছেন তা স্পষ্ট করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
রবিবার বিকেলে অরণ্যশহরের পাঁচ মাথার মোড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ও পুলিশ প্রশাসনের শাসকদলের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগে জনসভার ডাক দিয়েছিল ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি। সেখানে দিলীপকে বলতে শোনা যায়, ‘‘জঙ্গলমহলে তৃণমূলের নেতা নেই। তাই পূর্ব মেদিনীপুর থেকে নেতা ধার করে আনতে হচ্ছে। কিন্তু ধারের সংসার বেশিদিন চলে না।’’
লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের পর পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশাপাশি জঙ্গলমহলের দায়িত্ব শুভেন্দুর হাতে সঁপেছেন মমতা। কিছুটা দেরিতে শুরু করলেও এখন মাঝে মধ্যে ঝাড়গ্রাম আসছেন শুভেন্দু। দলের নেতাদের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠক করছেন। সমন্বয়ে গড়ে দিচ্ছেন কোর কমিটি। দলে যুযুধান বলে পরিচিতদের ঠাঁই দিচ্ছেন সেখানে। এ দিন দিলীপ বলেন, ‘‘যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী ভেবে থাকেন, মাওবাদী-জুজু দেখিয়ে আমাদের ভোট লুট করাবেন, তা হলে আমিও চ্যালেঞ্জ করছি, আমিও ঝাড়গ্রামের ছেলে। আমরাও বুঝে নেব। পুরভোট থেকে বোঝাবুঝিটা শুরু হবে।’’ এরপরই ছত্রধরের উদ্দেশে দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘মাওবাদীদের হাড়ে সেই জোর আর নেই। জেলে আট বছর থেকে ঘুন ধরে গিয়েছে, কোমরে ব্যথা হয়ে গিয়েছে। মাওবাদীরা আমাদের আটকে দেবে? তাই ছত্রধর মাহাতো হোক আর যেই হোক, যত মাওবাদী আছে ছেড়ে দিন, আমরাও দেখে নিতে চাই কার কত দম আছে।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলকে শুভেন্দুবাবু দিলীপবাবুর চেয়ে অনেক বেশি ভাল করে চেনেন। দিলীপবাবুর চেয়ে শুভেন্দুবাবুর গ্রহণযোগ্যতা বেশি।’’
পুরভোট না হওয়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি এ দিন যেমন তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন, তেমনি সারদা, নারদ-কাণ্ড নিয়ে হুঁশিয়ারিও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। তাঁর কথায়, ‘‘সিবিআইয়ের প্রেমপত্র পেয়ে তৃণমূলের নেতাদের রক্তচাপ বাড়ছে। পুজোর আগে অনেকের ডাক পড়বে। কেউ কেউ জেলের পুজো দেখবেন।’’
এ দিন সকালে দিলীপ ছিলেন রেলশহরে। পাঁচদিনের ব্যবধানে দু’টি গুলি সন্ত্রস্ত শহরবাসী। সামনেই রেলশহরে বিধানসভা উপ-নির্বাচন। তাকে কেন্দ্র করে তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল-বিজেপি। শহরে ঘুরে দাঁড়াতে শুভেন্দুকে সামনে রেখে আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল। এরই মাঝে গুলি কাণ্ডে বেড়েছে উত্তাপ। এ দিন দিলীপ বলেন, “খড়্গপুরের মানুষ গত পুরসভা, বিধানসভায় ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মাফিয়ারাজ তাঁরা চান না। বিধানসভা নির্বাচনে আমরা জিতেছিলাম। তার পরে এসব বন্ধও ছিল।’ এরপরই তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল ফের পুরনো রাস্তায় যাচ্ছে। খড়্গপুরে উপ-নির্বাচনের আগে মাফিয়ারাজ ফিরিয়ে এনে লোককে ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে।’’ শহরের একটি শপিং মলের কর্মীদের নিয়ে গঠিত বিজেপির সংগঠনের সূচনা করেন দিলীপ। সেখানেও বলেন, “খড়্গপুরে পুলিশ, নেতা কাউকে দাদাগিরি করতে
দেব না।”